স্টাফ রিপোর্টার: বিশ্বাস করতে অসুবিধা হবে। কিন্তু ঘটনা হল, গুনে গুনে ২০০ বার অস্ত্রোপচারের পর কাশির হাত থেকে মিলল রেহাই। আপাতত সুস্থ মনোজিৎ সাহা! তাঁর বয়স ৩১ বছর। বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur) রায়গঞ্জ।
মনোজিতের যখন আড়াই বছর বয়স সেই সময় থেকে কাশি হত। কিন্তু সর্দি হত না। কাশতে কাশতে গলা ব্যথা হয়ে যেত। কথা বলার সময় গলা থেকে শব্দ বের হত না। কিন্তু কাশি (Cough) কমার কোনও লক্ষণ নেই। প্রথমে রায়গঞ্জের ইএনটি বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসা করলেন। রোগ ধরা পড়ল। রোগের নেপথ্যে এক ধরনের ভাইরাস। নাম যার প্যাপিলোমা। আর রোগের নাম ‘রেসপিরেটরি প্যাপিলোমাইটিস’।
আরও পড়ুন: ফের নতুন নজির গড়লেন বুমরাহ, এবার মুকুটে কোন পালক যোগ হল?
ভাইরাসঘটিত রোগ যেমন বার বার ফিরে আসে ঠিক তেমনই মনোজিতের এই সমস্যা মাঝেমধ্যেই হত। যখনই হত তখনই অস্ত্রোপচার করতে হত। এস এস কে এম হাসপাতালের ইনস্টিটিউট অফ অটো রাইনো ল্যারিঙ্গোলজি অ্যান্ড হেড নেক সার্জারির অধ্যাপক ডা. অরুণাভ সেনগুপ্তর কথায়, “প্রথমটায় বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছিল। একটা ছেলের আড়াই বছর বয়স থেকে স্বরযন্ত্রের অপারেশন করতে হচ্ছে। কিন্তু রোগের ইতিহাস শুনে মনে হল এটাই একমাত্র পদ্ধতি। কিন্তু একবার অন্তত শেষ চেষ্টা করা যাক। যদি সুস্থ হয়।”
ব্যস! সেই শুরু। একের পর এক পরীক্ষা হল নাক, কান, গলার। উল্লেখ্য, প্যাপিলোমা ভাইরাস দুভাবে শরীরে প্রবেশ করে। প্রথমটি জন্মগত। দ্বিতীয়টি কৃত্রিমভাবে। এস এস কে এম হাসপাতাল সূত্রে খবর, জন্মের সময় মায়ের জরায়ু থেকে এই ভাইরাস সন্তানের নাক, কান দিয়ে ঢুকে পড়ে। এরপর অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলেই স্বমূর্তি ধারণ করে। শুরু হয় লাগাতার কাশি আর স্বরভঙ্গ। সোমবার সকালে ইএনটি-তে অস্ত্রোপচার হয়।
[আরও পড়ুন: ‘আচ্ছে দিন’, চিন ছেড়ে ভারতেই বিনিয়োগে মন ওয়াল স্ট্রিটের!]
অরুণাভবাবুর সঙ্গে অস্ত্রোপচারে ছিলেন ডা.দেবাশিস ঘোষ, ডা. অঙ্কিত চৌধুরি, ডা. সাবরিনা ফারহিন-সহ এক ঝাঁক তরুণ চিকিৎসক। কার্বন ডাই-অক্সাইড লেজার সার্জারি করে মনোজিতের স্বরযন্ত্র ও চারপাশের সবটা নষ্ট করা হয়। এতটাই সন্তর্পণে করা হয় যাতে গলার কোনও অংশের ন্যূনতম ক্ষতি না হয়। অস্ত্রোপচারের পর বেভাসিজুম্যাব ইনজেকশন দেওয়া হয়। অরুণাভবাবুর কথায়, ভাইরাস যাতে আর সংক্রমণ না ঘটাতে পারে সেজন্য প্রায় ৩৫ হাজার টাকা দামের ওষুধ দেওয়া হয়েছে। উডবার্ন ব্লকে আপাতত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে রোগীকে। কয়েকদিন পর বাড়ি ফিরবেন যুবক।