shono
Advertisement

ছোবল খেয়েছে স্ত্রী, সাপ হাতে সটান হাসপাতালে স্বামী! হুলুস্থুল ধূপগুড়িতে

কাণ্ড দেখে আতঙ্ক ছড়ায় গ্রামীণ হাসপাতালে।
Posted: 12:45 PM May 29, 2023Updated: 01:02 PM May 29, 2023

শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি : সাপটি (Snake) বিষাক্ত না-কি নির্বিষ অনেক সময় তা বুঝতে দেরি হয়ে যায়, তারপর চিকিৎসা শুরু করতে আরও কিছুটা সময় লাগে। এতে প্রাণসংশয় হয়ে যায় রোগীর। কিন্তু এক্ষেত্রে সেই ঝুঁকি নেননি ডুয়ার্সের (Duars) ধূপগুড়ির (Dhupguri) বাসিন্দা প্রদীপকুমার সরকার। শনিবার রাতে স্ত্রী অর্চনাকে সাপে কামড়েছে শুনেই পড়িমরি করে বাড়ি ফিরেই তন্নতন্ন করে সাপটিকে খুঁজে বের করেন। তারপর সাপ-সহ স্ত্রীকে নিয়ে সটান হাজির হন হাসপাতালে। এদিকে সাপ-সহ রোগীর স্বামীকে ইমার্জেন্সিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রীতিমতো হুলস্থুল কাণ্ড বেধে যায় ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। ছুটে আসেন চিকিৎসকরা। সাপ চিনতে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করে দেন। বর্তমানে পুরোপুরি সুস্থ অর্চনাদেবী। রবিবার বাড়ি ফিরে এসেছেন। সাপটিকেও জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ধূপগুড়ি শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অর্চনা সরকার। শনিবার রাতে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় আচমকা তাঁর পায়ে কামড় দেয় সাপ। আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠেন। ছুটে আসেন পাড়া প্রতিবেশীরা। তাঁরাই খবর দেন অর্চনাদেবীর স্বামীকে। সেই সময় দোকানেই ছিলেন গালামালের ব্যবসায়ী প্রদীপবাবু। জানান, এসে দেখতে পান স্ত্রী অসুস্থ বোধ করছে। এরপর সাপটির খোঁজ করতেই জানতে পারেন কামড় দিয়ে ঘরে ঢুকে পড়েছে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ঘরের এক কোনায় জুতোর আড়ালে সাপটিকে খুঁজে পান তিনি। পাড়া প্রতিবেশীদের কাছে জানতে চান সাপটি বিষাক্ত নাকি নির্বিষ। কিন্তু কেউ সেভাবে নিশ্চিত করে কিছু জানাতে না পারায় সাহস করে সাপটিকে ধরে প্লাস্টিকে ভরে স্ত্রীকে নিয়ে চলে আসেন হাসপাতালে।

[আরও পড়ুন: ২০০০-এর নোট বদলে বাধ্যতামূলক হোক পরিচয়পত্র, জনস্বার্থ মামলা খারিজ দিল্লি হাই কোর্টে]

এক হাতে সাপ আর এক হাতে অসুস্থ স্ত্রীকে আগলে প্রদীপবাবুকে এগিয়ে আসতে দেখে রীতিমতো হুলস্থুল কাণ্ড বেধে যায় ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা এগিয়ে আসেন। সাপটির ছবি তুলে বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হয়। সর্পবিশেষজ্ঞ মিন্টু চৌধুরি জানান, এই সাপটি ‘এনি’ নামে গ্রামবাংলায় পরিচিত। সাপটি নির্বিষ এবং লুপ্তপ্রায় প্রজাতির। ডোবা, পুকুর এবং নদীর পাড়ের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ এদের পছন্দের ঠিকানা। এরা ডিম নয়, সরাসরি বাচ্চা প্রসব করে বলে মিন্টুবাবু জানান।

[আরও পড়ুন: গেহলট-পাইলট দ্বন্দ্ব ঘোচানো লক্ষ্য, কর্নাটক মডেলে রাজস্থানেও বাজিমাত করতে চায় টিম খাড়গে]

সাপটি নির্বিষ জানার পর সেই মতো চিকিৎসা শুরু করে দেন চিকিৎসকরা। ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন অর্চনাদেবী। চিকিৎসা পেয়ে দ্রুত সুস্থ বোধ করতে থাকেন। ধূপগুড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. অঙ্কুর চক্রবর্তী জানান, এটি একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। তবে সব সময় সাপ-সহ রোগী হাসপাতালে আসে না। সে ক্ষেত্রে রোগীকে পর্যবেক্ষণে রেখে তাঁর ক্ষতস্থান পরীক্ষা করা হয়। তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে কি না তা লক্ষ করার পাশাপাশি রক্ত পরীক্ষা করে দেখতে হয় রক্ত জমাট বাঁধছে কি না। রক্ত জমাট না বাঁধলেই বিপদ। বুঝে নিতে হবে, বিষাক্ত সাপ ছোবল মেরেছে রোগীকে। সেই মতো প্রতিষেধক দিয়ে রোগীর চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া হয়। তাতে সময় কিছুটা লাগে। তবে এক্ষেত্রে সাপটিকে নিয়ে আসায় চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা সম্ভব হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার