সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্তানহারা মা-বাবার হাহাকারে যেন পৃথিবীর বুকও ফেটে যায়। চিনের এক দম্পতি তাঁদের হারানো ছেলেকে খুঁজে পেলেন ৩৭ বছর পর। ঘটনা কার্যতই হার মানায় সিনেমাকে। চিনা সংবাদপত্র 'দ্য সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট'-এ প্রকাশিত হয়েছে এই মর্মবিদারী কাহিনি!
ঠিক কী হয়েছিল? ১৯৮৬ সালে জন্মগ্রহণ করে ওই শিশুটি। সেই সময়ই তার ঠাকুমা তাকে তুলে দেন অন্য এক ব্যক্তির হাতে। তাকে বিক্রিই করে দেন অর্থের বিনিময়ে! সেই সময় শিশুটির বয়স মাত্র ১ দিন। বিষয়টি ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি অসহায় দম্পতি। পরে বাচ্চাটির খোঁজ পড়লে মহিলা জানিয়ে দেন, তাঁর মতে আরও একটি সন্তানকে পালন করা ওই দম্পতির পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তাকে বিক্রি করে দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, শিশুটির আগে আরও দুটি সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তাঁর মা।
[আরও পড়ুন: ১০ বছরে প্রথমবার স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বিরোধী দলনেতা, রাহুলের জন্য বরাদ্দ পিছনের আসন]
কয়েক বছরের মধ্যে মারা যান ওই বৃদ্ধা। পরবর্তী তিন দশক ধরে নিজেদের সন্তানকে পাগলের মতো খুঁজে গিয়েছেন তাঁরা। অবশেষে সন্ধান মেলে গত ফেব্রুয়ারিতে।
আসলে ২০০৯ সালে চিনের (China) পুলিশ একটি বিরাট ডিএনএ ডেটাবেস তৈরি করে। যে সব দম্পতির সন্তান নিখোঁজ, তাঁদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। পাশাপাশি দত্তক সন্তানরা যাঁরা তাঁদের জৈবিক বাবা-মায়ের খোঁজ চান তাঁদেরও নমুনার ব্যাঙ্কিং করা হয়। আর এর সাহায্যেই হয় হারানিধি সন্ধান। ফেব্রুয়ারিতে দেখা যায় দম্পতির রক্তের নমুনার সঙ্গে মিলে গিয়েছে প্যাং নামের এক যুবকের সঙ্গে। নিশ্চিত হতে ফের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হয়। আগস্টে তার ফল মিলতেই নিশ্চিত হয়ে যায় পরীক্ষার ফল মিথ্যে বলছে না। প্যাংই ওই দম্পতির হারিয়ে যাওয়া সন্তান।
অবশেষে দেখা হয়েছে তিনজনের। প্যাংয়ের জৈবিক পিতা লি নামের ওই ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রী তাঁর হাতে ধরে বলেছেন, ''তোমার জন্য বাবা ও মা খুব দুঃখিত। এই দীর্ঘ সময়টা কেমন কেটেছে?'' প্যাংকে বুকে জড়াতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। কিন্তু প্যাং ছিল কার্যতই অপ্রস্তুত। এতদিন পর কোনও অচেনা দম্পতিকে নিজের আসল মা-বাবা হিসেবে মেনে নিতে গিয়ে সে যেন সব হিসেব গুলিয়ে ফেলছিল।