শান্তুনু কর, জলপাইগুড়ি: ভূতের হানা কিনা শীতের রাতে! কখনও খাট নড়ছে। আবার কখনও পড়ছে আলমারি। বাড়ির এঘর ও ঘর থেকে নাকি ভেসে আসছে চাপা কান্না। হাড়হিড় এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কে জলপাইগুড়ির নিউ সার্কুলার রোডের বাসিন্দা গৌতম দে এবং তাঁর পরিবার। কোথা থেকে আসছে এই আওয়াজ! কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না ওই পরিবার। এই অবস্থায় সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন গৌতম দে।
ছেলে দেবব্রতকে নিয়ে রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন গৌতমবাবু। সেই সময়ে নাকি হঠাৎ করেই কান্নার আওয়াজ শুনতে পান তিনি। গৌতম দে জানান, কান্নার শব্দে ঘুম ভেঙে যায়! তার পরেই শুরু হয় ভুতুড়ে কান্ড কারখানা। যা শুনে প্রতিবেশীদের ও হাড়হিম হওয়ার অবস্থা। আবাস যোজনায় পাওয়া বাড়ির এক ঘরে থাকেন গৌতমবাবু। আরেক ঘরে ছেলে। স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। পাশের বাড়িতে থাকেন মা সন্ধ্যা দে।
দেবব্রতবাবু জানান, রবিবার রাত তখন বারোটা তখনই শুরু হয় ভুতুড়ে ঘটনা। আচমকাই কোনও কারণ ছাড়াই মেঝেতে পড়ে যায় ড্রেসিং টেবিল, আলমারি-সহ ঘরের একাধিক আসবাবপত্র। এখানেই শেষ নয়, গ্যাস ওভেন নিয়ে শুরু হয় টানাহেঁচড়া, যেন অদৃশ্য কেউ সেটিকে ছুঁড়ে ফেলছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘরে ছড়িয়ে পড়ে পোড়া গন্ধ। দেখতে পান কম্বল ও বিছানার চাদরে আগুন জ্বলছে। আশ্চর্যের বিষয় ঘরের ভেতর তৃতীয় কোনও ব্যক্তিকে দেখতে পাননি তারা। এই অবস্থায় ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন বাবা, ছেলে দুজনেই।
আতঙ্কে গোটা পরিবার।
দেবব্রত জানান, ভূতের ভয়ে আর ঘরে ঢোকেন নি। আতঙ্কে শীতের রাত খোলা আকাশের নিচেই কাটায় গোটা পরিবার। এই অবস্থা দেখে আশপাশের মানুষজনও এগিয়ে আসেন। দেবব্রতবাবুর মুখে পুরো ঘটনা শুনে তারাও তাজ্জব! পরিবারের সদস্যরা জানান, সোমবার সকালেও তাঁরা বেশ কয়েকবার কান্নার শব্দ শুনেছেন। তাতে আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর উত্তম বসু। জানান, কি কারনে এই ঘটনা বোঝে ওঠা যাচ্ছে না। তাঁর কথায়, বাড়ির লোকজন দাবি করছেন ভূতের কান্ডকারখানা নাকি তাঁরা চাক্ষুষ করেছেন!
অন্যদিকে এই সময়ে দাড়িয়ে বিষয়টি বিশ্বাস যোগ্য না হওয়ায় সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন দে পরিবার। সংগঠনের প্রতিনিধি আসলে আসল ঘটনা সামনে আসবে বলেও আশাবাদী তাঁরা। সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের সম্পাদক ড: রাজা রাউত জানান, ভূত বলে কিছু হয়না। সবই মনের ভুল। অবশ্যই রহস্যের খোঁজ চালানো হবে।
