সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এদেশে নৈতিকতার পাঠ শেখানো ব্যক্তিত্বের কমতি নেই। রাম থেকে বুদ্ধ, শ্রীকৃষ্ণ থেকে চৈতন্য... বলতে শুরু করলে মহাপুরুষের তালিকা শেষ হবে না। সেই ভারতকে কালিমালিপ্ত করে চলেছেন একশ্রেণির অসৎ সরকারি আধিকারিক। যাঁদের বদান্যতায় গোটা বিশ্বে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ভারতের স্থান হচ্ছে উপরের দিকে। এঁরা ঘুষ খাওয়াকে কার্যত শিল্পে পরিণত করেছেন! সম্প্রতি তদন্ত সূত্রে উঠে এসেছে চমকে দেওয়া তথ্য, দরিদ্র কৃষকের উপর থেকে 'ভার' কমাতে বিমা সংস্থার কায়দায় কিস্তিতে ঘুষের টাকা নিচ্ছেন একদল সরকারি আধিকারিক। আজব কাণ্ডে চক্ষু চড়কগাছ দুর্নীতি দমন শাখার।
চলতি বছরের মার্চ মাসে SGST বিলিং কেলাঙ্কারির ঘটনায় এক ব্যক্তির কাছে ২১ লক্ষ টাকা ঘুষ চাওয়া হয়েছিল। একবারে তা দেওয়া সম্ভব নয় জেনেই ২ লক্ষ করে ন'টি কিস্তিতে এবং ১ লক্ষ টাকার অন্তিম কিস্তির ব্যবস্থা হয়। গত ৪ এপ্রিল সুরাটের একটি পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান কৃষিজমির একটি কাজের জন্য জনৈক গ্রামবাসীর কাছ থেকে ৮৫ হাজার টাকা ঘুষ চান। ওই গ্রামবাসীর আর্থিক অবস্থা ভালো নয়, সেকথা বিবেচনা করে কিস্তিতে ঘুষ দেওয়ার কথা বলেন 'সদয়' উপ-প্রধান। খুব সম্প্রতি সবরকণ্ঠের দুই পুলিশকর্মী ৪ লক্ষ ঘুষের টাকা নিয়ে পালান। এক বক্তির কাছে ১০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল। তাঁকে কিস্তিতে ঘুষ দেওয়ার সুবিধা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
[আরও পড়ুন: মন্ত্রিত্বের সংখ্যায় নমনীয় বিজেপি, কিন্তু সরকারের ‘রাশ’ ছাড়তে নারাজ মোদি-শাহরা]
দুর্নীতি দমন শাখার তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ঠিক যেভাবে বাড়ি, গাড়ি-সহ অধিকাংশ পণ্য কেনার সময় সহজ কিস্তিতে টাকা শোধের সুবিধা দেয় সংস্থাগুলি, সেই পদ্ধতিতে ঘুষ নিচ্ছেন দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি আধিকারিকরা। ঘুষ নিয়ে ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স বাড়ানোর কোনও সুযোগ ছাড়ছেন না তাঁরা। দুঃখের বিষয় হলে ছোট থেকে বড় আধিকারিক, পঞ্চায়েত থেকে মন্ত্রক, পুলিশ হোক কিংবা খোদ দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিক, ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে কেউ পিছিয়ে নেই। মানব সভ্যতার আদিকাল থেকে চালু আসা এই অন্যায়ের ওষুধ মেলেনি ২০২৪ সালেও। যদিও নৈতিকতার পাঠ দেওয়া কম অবতার জন্মায়নি ভারতভূমে।