সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন চোরের উপর বাটপাড়ি। চোর ধরতে গিয়ে উদ্ধার হওয়া সোনা (Gold) নিজেদের মধ্যেই ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠল পুলিশেরই বিরুদ্ধে। তথ্যতালাশ করতে করতে যা জানা গেল, তা দেখে পুলিশের দুঁদে অফিসারদের চোখ কপালে। এ তো সর্ষের মধ্যেই ভূত! উদ্ধার হওয়া সোনা নাকি নিজেরাই ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন আটজন পুলিশকর্মী। বিষয়টি টের পেতেই তড়িঘড়ি তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
বেলঘরিয়া (Belgharia) এলাকার ঘটনা। দিন দুই-তিন আগে টহলদারির সময় সোনাসমেত এক ব্যক্তিকে পাকড়াও করেন তিন পুলিশ। উদ্ধার হয় ৩০০ গ্রাম সোনা। সেই সোনা তো জমা পড়ার কথা থানায় বা নির্দিষ্ট জায়গায়। কিন্তু তা তো হয়নি। শেষমেশ যাঁর থেকে সোনা উদ্ধার হয়েছিল, সেই ব্যক্তিই দমদম জিআরপিতে (GRP) অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, তিনি সোনা নিয়ে ট্রেনে চড়ে যাওয়ার সময়ে কয়েকজন কাস্টমস (Customs) অফিসার পরিচয় দিয়ে দমদম স্টেশনে নামায়। তারপর সোনা নিয়ে নেয় তারা।
[আরও পড়ুন: আগামী দিনে সব শূন্যপদ পূরণ করবে রাজ্য, দ্রুত শুরু শিক্ষক নিয়োগ, বিধানসভায় আশ্বাস ব্রাত্যর]
সোনা হাতানোর ঘটনায় ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় যে যাঁরা কাঠগড়ায়, তাঁদের মধ্যে তিনজন কনস্টেবল, ১জন সিভিক ভলান্টিয়ার এবং ২জন হোমগার্ড। তাঁদের এই কীর্তির কথা জানতে পারেন বারাকপুরের (Barrackpore) পুলিশ কমিশনার (CP) মনোজ বর্মা বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। একটি তদন্তকারী দল গঠন করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাঠানো হয় বারাকপুর কমিশনারেটের সব কটি থানায়। এরপরই জানা যায়, বেলঘরিয়া থানার পিসি পার্টির দু’জন সাব ইন্সপেক্টর ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। এরপর অভিযুক্তদের কয়েকজনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁরা জানান, ঘটনার দিন ওই এলাকা দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কারও যাওয়ার কথা ছিল। সেই খবর পেয়ে সেখানে হানা দেয়। ওই ব্যক্তিকে সন্দেহ হওয়ায় দমদম স্টেশনে নামিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর কাছ থেকে কোনও সোনা নেওয়া হয়নি।
[আরও পড়ুন: রামপুরহাট কাণ্ড নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে বিজেপি, মিলল মামলা দায়েরের অনুমতি]
এ বিষয়ে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এই ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথোপকথন করতে দেখা গিয়েছে। তবে, তাঁর কাছ থেকে সোনা নেওয়ার কোনও ফুটেজ পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। কৃতকর্মের জন্য এঁদের যথাযথ শাস্তিও হয়ত হবে। কিন্তু তাতে কি অন্দরের অসুখ সারবে? আইন রক্ষার শপথ নিয়ে যাঁরা নিজেরাই এমন আইন ভাঙার কাজ করছেন, তাঁদের কি আদৌ শিক্ষা হবে?