সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারতের উত্তর-পূর্বের সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণ জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নীতিগত ভাবে এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে সফরের প্রস্তুতি বিদেশমন্ত্রকের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরেই হবে বলে খবর। একইসঙ্গে, শীঘ্রই যৌথ নদী কমিশনের পরবর্তী বৈঠক হবে বলেও জানা গিয়েছে।
শনিবার ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ শাহরিয়ার আলম বলেন, “আমরা ভারতের ডোনার মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি এবং উত্তর-পূর্বের সমস্ত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের অন্তত তিনদিনের জন্য বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক ও বণিক সভার প্রতিনিধিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।” তাঁর কথায়, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা মাঝে মাঝেই বাংলাদেশ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। কিন্তু তিনিই আবার বলেন বাংলাদেশে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন বলে উত্তর-পূর্বাঞ্চল শান্ত রয়েছে। বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রীর কথায়, বাণিজ্যের পাশাপাশি নিরাপত্তা নিয়েও কথা হবে তাঁদের সঙ্গে।
[আরও পড়ুন: রানির শেষকৃত্যে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা, লন্ডন যাচ্ছেন আগামী সপ্তাহেই]
বিশ্লেষকদের মতে, সম্প্রতি হাসিনার (Sheikh Hasina) ভারত সফরের পর এই আমন্ত্রণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ঢাকার উপর চিনের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত দিল্লি। এবং সেই কথা ঠারে ঠারে বুঝিয়েও দিয়েছে মোদি সরকার। তাই সন্দেহের মেঘ কাটাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এক নতুন দিশা দিতেই এই পদক্ষেপ হাসিনা সরকারের। তাছাড়া, ভারতের উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত করাও উদ্দেশ্য মুজিবকন্যার। তিনি ভালই জানেন, অসম-সহ ‘সেভেন সিস্টার’ রাজ্যগুলিতে সন্ত্রাস দমনে দিল্লির ভরসা ঢাকা।
উল্লেখ্য, ৫ সেপ্টেম্বর ভারত সফরে এসেছিলেন হাসিনা। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির (Narendra Modi সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। ওই বৈঠকে তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে কোনও আশ্বাস না মিললেও অসমের কুশিয়ারা নদীর জল নিয়ে পাকাপাকি চুক্তি হয়েছে। ১৫৩ কিউসেক জল নেবে বাংলাদেশ। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি, মহাকাশ ক্ষেত্রে দুই দেশ একে অপরের হাত ধরে চলবে। হায়দরাবাদ হাউসের ওই বৈঠকে দুই রাষ্ট্রপ্রধান মোট ৭ টি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। তারমধ্যে রয়েছে রেল, সড়ক, বিদ্যুৎ-সহ আরও বেশ কয়েকটি চুক্তিও।