সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মালদ্বীপের রাজনীতিততে বড় অঘটন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে গেলেন আবদুল্লা ইয়ামিন। তীব্র ভারত বিরোধী এবং চিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ৫৯ বছরের ইয়ামিন সোমবার নিজের হার স্বীকার করে নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ৫৪ বছরের ইব্রাহিম মহম্মদ সলিহ ওরফে ইবু। গণতন্ত্রপন্থী ও ভারতের বন্ধুসলিহর জয়ে আশার আলো দেখতে শুরু করেছে নয়াদিল্লি৷ পাশাপাশি, আশঙ্কার কালো মেঘ তৈরি হয়েছে বেজিংয়ের কপালে৷
[আলোচনার টেবিলে বসার সিদ্ধান্ত দুর্বলতা নয়, ভোলবদলে বার্তা ইমরানের]
উল্লেখ্য, ২০১৩-তে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ব্যাপক দমননীতি চালু করেন বিদায়ী ইয়ামিন সরকার। চিনের কাছে এখন ঋণের জালে ডুবে রয়েছে গোটা মালদ্বীপ। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের গ্রেপ্তার করে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেন ইয়ামিন। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রায় শেষ করে দিয়েছেন তিনি। পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে ইয়ামিনের অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতায় প্রমাদ গোনে দিল্লি। কারণ ভারত মহাসাগরে মালদ্বীপ হল গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপরাষ্ট্র। সামরিক ও কৌশলগত কারণে এই ক্ষুদ্র দেশের গুরুত্ব বিশাল। এখানে নৌসেনা ঘাঁটি তৈরি করে নৌবহর মোতায়েন করতে চায় চিন। মালদ্বীপে গণতন্ত্র ফেরাতে ভারতের আরজি বার বার খারিজ করে দেন ইয়ামিন। ফলে মালদ্বীপের স্ট্রংম্যান নামে পরিচিত ইয়ামিনের বিরুদ্ধে দেশবাসীর ক্ষোভ তলে তলে বাড়ছিল। নীতির প্রশ্নে দলের অন্দরেই একা পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। শেষমেশ নয়াদিল্লির অঙ্কই ঠিক হল। ভোট বাক্সে ইয়ামিনকে ছুড়ে ফেলে দিলেন মালদ্বীপবাসী। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ইয়ামিনকে হারালেন সলিহ। ভারতের বন্ধু এবং গণতন্ত্রের প্রতি অনুগত বলেই সুনাম আছে সলিহর। ইয়ামিন ছিল চিনের তুরুপের তাস। ইয়ামিনকে যাতে ‘ডিসটার্ব’ না করা হয় সেজন্য ভারতকে অতীতে প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিয়ে রেখেছিলেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। কিন্তু ইয়ামিন যে জনগণ থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছেন তা বুঝতে পারেনি বেজিং।
[ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, হুঁশিয়ারি পাক সেনার]
রবিবার রাতে ভোট গণনার পরই সলিহর জয় নিশ্চিত হয়। সোমবার রাজধানী মালে-তে বিজয় মিছিল বের করেন সলিহর সমর্থকরা। সলিহ ও তাঁর দলের কর্তাব্যক্তিরা খুশিতে মেতে ওঠেন। ইয়ামিন পেয়েছেন ৪১.৭ শতাংশ ভোট। সলিহ পেয়েছেন ৫৮.৩ শতাংশ ভোট। সোমবার সলিহকে ফোন করে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদিকে পালটা শুভেচ্ছা জানিয়ে মালদ্বীপ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সলিহ। দু’জনের মধ্যে ফোনে এদিন কিছুক্ষণ কথা হয়। সলিহ বলেন, ”এই জয় ঐতিহাসিক। স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে মালদ্বীপের মানুষের জয়। গণতন্ত্রের যথার্থ জয়। আশাবাদের জয়। কারাগারের লোহার দরজা থেকে ব্যালট বক্সের লড়াই, আমাদের অনেকটা পথ পেরতে হয়েছে। কিন্তু লড়াই থামেনি।”
The post মালদ্বীপের মসনদে ‘ভারত-বন্ধু’ সলিহ, আশঙ্কার কালো মেঘ চিনের কপালে appeared first on Sangbad Pratidin.