সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশা জাগিয়েও স্বপ্নভঙ্গ। অলিম্পিকে (Paris Olympics 2024) তৃতীয় পদক জিতে ইতিহাস তৈরি করা হল না মনুর (Manu Bhaker)। ২৫ মিটার পিস্তলে থামতে হল চতুর্থ স্থানে। কিন্তু এর আগেই দুটি ইভেন্ট ব্রোঞ্জ জিতে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন ভারতীয় শুটার। একদিকে দুটি পদকজয়ের সাফল্য, অন্যদিকে কাছে এসেও তৃতীয় পদক না জিততে পারার যন্ত্রণা। ইভেন্টের শেষে তাঁর মুখে শোনা গেল মায়ের কথা। বিশেষ ধন্যবাদ জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।
টোকিও অলিম্পিকে ব্যর্থ হয়েছিলেন মনু। সেখান থেকে প্যারিসে দুটো পদক। মনুর সাফল্যের রহস্য কী? তিনি বলছেন, "প্রচুর পরিশ্রম করেছি। আমার জন্য অনেক মানুষই খেটেছেন। যাতে আমি পোডিয়ামে উঠতে পারি। ভারত পদক জিততে পারে। আমি খুব খুশি যে পুরো দল আমাকে সব সময় সমর্থন জুগিয়ে গিয়েছে। আমি তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। সাই টিম ও পুরো মন্ত্রককেও ধন্যবাদ জানাই। মোদিজির কাছে কৃতজ্ঞ, তিনি ব্যস্ততার মধ্যে থেকেও আমাকে সময় দিয়েছেন। কোচ যশপাল সিং, বন্ধুরা তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। পরের বার আরও ভালো করব।"
[আরও পড়ুন: হেরে গিয়েও বড় আর্থিক পুরস্কার পাচ্ছেন ইটালির বক্সার কারিনি, কত টাকা পাচ্ছেন?]
মনু কৃতজ্ঞ তাঁর মা সুমেধা ভাকেরের কাছেও। মনুর মা তাঁর খেলা দেখেন না। ২২ বছর বয়সি শুটার বলছেন, "মার আত্মত্যাগের জন্য ধন্যবাদ। মার জন্য আমি বহু মানুষের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি মা। সুস্থ থাকো, বছরের পর বছর আমার সঙ্গে থাকো।"
চলতি অলিম্পিকে ১০ মিটার সিঙ্গলস ও মিক্সড ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন মনু। স্বাভাবিকভাবেই গোটা দেশের প্রত্যাশা ছিল, ২৫ মিটার পিস্তলেও পদক পাবেন তিনি। সোশাল মিডিয়া জুড়ে ছিল তীব্র উন্মাদনা। কিন্তু এসব থেকে অনেকটাই দূরে ছিলেন তিনি। মনু জানতেনই না, তাঁকে নিয়ে এতটা উচ্ছ্বাস দেশজুড়ে। তিনি বলেন, "সোশাল মিডিয়া আমি দেখিইনি। ফোন থেকেও আমি দূরে ছিলাম। ফলে সেখানে কী চলছে আমি টের পাইনি। নিজের উপর প্রত্যাশাপূরণের আলাদা চাপও তৈরি করিনি। নিজের সেরাটা দিতে চেয়েছিলাম। আগের ইভেন্টগুলোতে সাফল্য এসেছে। কিন্তু এবার হল না।"
[আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলকে কদর্য আক্রমণ ইউটিউবারের, প্রতিবাদ বাংলা জুড়ে]
এই ইভেন্টে চতুর্থ হলেন তিনি। কিন্তু দুটো শটেই পার্থক্য তৈরি হয়ে গেল। কিছুটা নার্ভাসও ছিলেন মনু। ভারতের তারকা শুটার বলছেন, "কিছুটা নার্ভাস ছিলাম। তার মধ্যেও চেষ্টা করেছিলাম মাথা ঠান্ডা রেখে সর্বস্ব দেওয়ার জন্য। কিন্তু সেটা যথেষ্ট ছিল না। প্রতিটা শটই লক্ষ্যে মারতে চেয়েছি। কিন্তু এদিন সব কিছু পরিকল্পনা মাফিক হল না।" কিন্তু তাতেও দেশজুড়ে তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বাস। মনু যদিও পুরোপুরি খুশি নন চতুর্থ স্থান পেয়ে। তবে এটাও স্বীকার করছেন যে, দুটো অলিম্পিক মেডেল তাঁকে বাড়তি অনুপ্রেরণা জোগাবে।
আপাতত পরের লক্ষ্যে মনোনিবেশ করছেন তিনি। মনু বলেন, "যে মুহূর্তে ম্যাচ শেষ হয়েছে, তখন থেকেই নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি।" এখানেই থামবেন না তিনি। কারণ লক্ষ্যটা অনেক বড়। ২০২৬-এ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক। সেটাকে পাখির চোখ করে আরও পরিশ্রমের বার্তা তাঁর। পদকের রং বদলাবেন, দেশকে সাফল্য এনে দেবেন। সেই শপথ নিচ্ছেন মনু। গোটা দেশও আশাবাদী তাঁকে নিয়ে।