সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাইওয়ান ইস্যুতে ‘বন্ধু’ চিনের পাশে দাঁড়াল পাকিস্তান। মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফর আঞ্চলিক নিরাপত্তা ভঙ্গ করছে বলে তোপ দেগেছে ইসলামাবাদ। একইসঙ্গে, ‘একচিন নীতি’র প্রতি ফের সমর্থন জানিয়েছে ইসলামিক রাষ্ট্রটি। বুধবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রক জানায়, তাইওয়ানর বর্তমান পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। এটা আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড়সড় চ্যালেঞ্জ।
চিনা রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মঙ্গলবার রাতে মালয়েশিয়া থেকে তাইওয়ান পৌঁছন আমেরিকার হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দক্ষিণ চিন সাগরে ঢুকে পড়ে আমেরিকার যুদ্ধবিমানের বহর। পেলোসির নেতৃত্বে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলকে নিরাপত্তা দিতে জাপানের বিমানঘাঁটি থেকে ওড়ে আমেরিকার বিমানবাহিনীর ১৩টি যুদ্ধবিমানের একটি স্কোয়াড্রন। এদিকে, চিনা বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র হুয়া চুনইয়ং মঙ্গলবারও পেলোসির সফর নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওয়াশিংটনকে। তিনি বলেন, “এর বড় মূল্য দিতে হবে।” ১৯৯৭ সালের পরে এই প্রথম আমেরিকার কোনও শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক তাইওয়ান সফরে গেলেন। আর তা নিয়েই আপত্তি তুলেছে শি জিনপিং সরকার।
[আরও পড়ুন: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে হ্যাকার হানা! পালটে যেতে পারে আস্ত ব্যালট!]
এহেন পরিস্থিতিতে এদিন পাকিস্তান (Pakistan) নিজের ‘আমেরিকা বিরোধী’ অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। পাক বিদেশমন্ত্রকের ইঙ্গিতপূর্ণ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে বিশ্ব একটি জটিল সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। এর ফলে খাদ্য ও জ্বালানির জোগান জনিত সমস্যা তৈরি হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে আরও একটি সংঘাতের মুখোমুখি হওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই বিশ্বের। পাকিস্তান বিশ্বাস করে পারস্পরিক সম্মানর উপর দুই রাষ্ট্রের সম্পর্ক নির্ভর করে। একইসঙ্গে, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা কাম্য নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, ঋণের ভারে ভেঙে পড়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতি। বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার প্রায় শূন্য। করোনা মহামারী, অপশাসন ও ঋণের ভারে পাকিস্তানের অর্থনীতি কার্যত হাঁটু গেড়ে বসে পড়েছে। জোর ধাক্কা খেয়েছে পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি। ফলে তলানিতে ঠেকেছে বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার। ফলে খাবার থেকে ওষুধ সবকিছুরই দাম ভয়ানক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (IMF) থেকে ঋণ পেতে মরিয়া ইসলামাবাদ। তবে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগে সেই ঋণ পেতে কিছুটা সমস্যার মুখে পড়েছে শরিফ সরকার। ফলে চিনকে (China) খুশি করে আর্থিক প্যাকেজ বাগিয়ে ফেলতে চাইছে পাকিস্তান। একইসঙ্গে তাই ওয়ান ইস্যুতে আমেরিকাকে কিছুটা চাপে রেখে কিছুটা সুবিধা আদায় করাও দেশতর উদ্দেশ্য।