তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: আর পাঁচটা টোটো চালকের মতোই দিনরাত শহরের এপার থেকে ওপারে ঘুরে বেড়াত বছর তিরিশের এক যুবক। টোটোতে সওয়ার যাত্রীদের দিনরাত পৌঁছে দিত শহরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত। স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) অভিযানের আগে নিতান্তই সাধারণ দেখতে ওই টোটো চালককে দেখে ঘুণাক্ষরেও কেউ টের পাওয়া যাবে না যে টোটো চালকের বেশেই সে দেশের নানা খুঁটিনাটি খবর পৌঁছে দিত পাকিস্তানে বসে থাকা তার আইএসআই এজেন্টকে। নিত্যদিনের হালহকিকত থেকে সেনাবাহিনীর গতিপ্রকৃতি সবদিকেই কড়া নজর রাখত সে।
একেবারে সাদামাটা ভঙ্গিমায় লাগাতার দু’বছর ধরে শিলিগুড়ির ভারতনগরে বাড়ি ভাড়া করে লাগাতার গোপন তথ্য পাচার করত আইএসআই চর গুড্ডু কুমার। বিহারের চম্পারণ এলাকার বাসিন্দা গুড্ডুর গতিবিধি দেখে সন্দেহ হয়নি তার সহকর্মীদেরও। তবে এসটিএফের গোয়ান্দারা বুধবার তাঁকে গ্রেপ্তার করার পর চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গিয়েছে তাঁদের। এসটিএফ এদিন তাঁকে গ্রেপ্তার করে জলপাইগুড়ি আদালতে পাঠিয়ে ১৪ দিনের হেফাজতে নিয়েছে।
[আরও পড়ুন: OMR শিটে বিস্তর গরমিল, SSC’র গ্রুপ ডি দুর্নীতিতে ED তদন্তের নির্দেশ হাই কোর্টের]
এ প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি আদালতের সরকারি আইনজীবী মৃন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এসটিএফ একজনকে চর সন্দেহে গ্রেপ্তার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১৪ দিনের এসটিএফ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।” এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত গুড্ডু প্রায় দু’বছর আগে ভারতনগরে বাড়িভাড়া নিয়েছিল। সেখানে সে তার স্ত্রীর সঙ্গে থাকতো। পরবর্তীতে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন এলাকাতেই টোটো চালানোর কাজ শুরু করে।
গোয়েন্দাদের অনুমান, স্টেশনে সেনাবাহিনীর গতিবিধি, ভিআইপির গতিবিধিতে নজর রাখত সে। পরে বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও সোশ্যাল মিডিয়ার নানা সাংকেতিক ইঙ্গিতে খবর পাঠাত আইএসআইকে। বেশ কয়েকবার পাহাড়েও ঘুরতে যাওয়ার আছিলায় সে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। যদিও, গ্রেপ্তারির সময়ে তার লাছে কোনরকম নথি পাওয়া যায়নি। এসটিএফ আধিকারিকেরা এদিনই তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়ায় জেরা করার উপযুক্ত সময় পায়নি। তবে হেফাজতে নিয়ে লাগাতার জেরা করলে অনেক গোপন তথ্য পাওয়া যাবে বলেই আশাবাদী গোয়েন্দারা।