সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৯২ সালের বার্সেলোনা গেমসের ৩২ বছর পর অলিম্পিকে ফের পদক জয় পাকিস্তানের। সে বার হকির ব্রোঞ্জ জিতেছিল পাকিস্তানের পুরুষ দল। এ বার পুরুষদের জ্যাভলিন থ্রোয়ে সোনা জিতলেন আর্শাদ। তাও ৯২.৯৭ মিটার দূরত্বে জ্যাভলিন ছুড়ে নতুন অলিম্পিক রেকর্ড গড়ে। পাকিস্তানের প্রথম খেলোয়াড় হিসাবে অলিম্পিক্সে ব্যক্তিগত সোনা জিতলেন। প্রশ্নাতীতভাবেই ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন আর্শাদ নাদিম (Arshad Nadeem)। আর সেই খুশিতেই জ্যাভলিন থ্রোয়ারকে ১ মিলিয়ন নগদ পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন আলি জাফর (Ali Zafar)।
পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা হওয়ার পাশাপাশি আলি জাফর বলিউডেও একাধিক কাজ করেছেন। সুদর্শন অভিনেতার মহিলা ভক্তর সংখ্যা ভারতে নেহাত কম নয়! এবার পাকিস্তানের আর্শাদ নাদিম অলিম্পিক জ্যাভলিনে সেই অভিনেতা ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা জানালেন। নীরজ চোপড়াকে পরাস্ত করতেই পাকিস্তানের ক্রীড়াপ্রেমীরা উল্লাসে ফেটে পড়েছেন সোশাল মিডিয়ায়। আলি জাফর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ৯২.৯৭ মিটার দূরত্বে জ্যাভলিন ছুড়ে পাকিস্তান নয়া রেকর্ড গড়েছেন নাদিম। আলি জাফর ফাউন্ডেশনের তরফে ওঁকে ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেব। এরপরই পাক সরকারের কাছে নাদিমকে নিয়ে বিশেষ অনুরোধ রাখেন অভিনেতা।
এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে পাকিস্তানি সুপারস্টারের সংযোজন, "আমাদের হিরোদের যেরকম উদযাপন প্রাপ্য, সেটাই করে দেখিয়ে দিন। ওঁকে যেন হিরোর মতো স্বাগত জানানো হয় দেশে সরকারের কাছে অনুরোধ করছি। এবং নাদিমের নামে পাকিস্তানে একটা ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান খোলা হোক। যদি আমাদের অ্যাথলিটরা এবং খেলোয়াড়রা সরকারকে যথাযথভাবে পাশে পান, তাহলে বছরে ১০টা করে সোনা জিতব আমরা।"
[আরও পড়ুন: ‘দেশে শান্তি বিরাজ করুক’, মায়ের অসুস্থতাজনিত কারণেই বাংলাদেশ নিয়ে ‘চুপ’ চঞ্চল]
শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে প্যারিস অলিম্পিকে ইতিহাস গড়েছেন পাকিস্তানের আর্শাদ নাদিম। তাঁকে বর্তমানে পাকিস্তানের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদ হিসেবে সম্বোধন করছেন সেদেশের ক্রীড়াপ্রেমীরা। নাদিমের বাবার রোজগারপাতি বিশেষ ছিল না। জ্যাভলিন ছোড়া যখন শুরু করলেন পাকিস্তানের আর্শাদ নাদিম, তখন কোনওক্রমে গ্রামবাসীদের এবং স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে প্রশিক্ষণ চলত। অলিম্পিকের আগে দীর্ঘদিন বিশ্বমানের জ্যাভলিনও ছিল না তাঁর কাছে। পাকিস্তানের তারকা জ্যাভলিন থ্রোয়ার এ বছরের মার্চ মাসে জানিয়েছিলেন, ৭-৮ বছর ধরে তিনি স্থানীয় জ্যাভলিন দিয়ে অনুশীলন করছেন। যা থেকে চোট-আঘাতের সম্ভবনা রয়েছে। তিনি চোট পেয়েছিলেনও। যার জন্য অস্ত্রোপচারও তাঁকে করাতে হয়েছিল। সব কিছুতেই তাঁকে ভরসা করতে হয়েছে অন্যের সাহায্যের। আসলে অর্থনৈতিকভাবে ভরাডুবির মধ্যে দিয়ে যাওয়া পাকিস্তানের অলিম্পিক সংস্থা, জ্যাভলিন সংস্থা সবারই হাঁড়ির হাল। কেউই সেভাবে সাহায্য করতে পারেননি নাদিমকে। সেকারণে কখনও তাঁকে সাহায্য নিতে হয়েছে প্রতিবেশী, বন্ধুদের। কখনও সাহায্য পেয়েছেন Olympic Solidarity scholarship-এর। কখনও ক্রাউডফান্ডিংও করেছেন। দীর্ঘদিন কোনও স্পনসর ছিল না নাদিমের। সেই আর্শাদ নাদিমই অলিম্পিক মানচিত্রে ফের একবার তুলে ধরলেন পাকিস্তানের নাম।