দেব গোস্বামী, বোলপুর: লক্ষ্য একটাই। ক্যানসারে প্রয়াত স্ত্রীর শেষ ইচ্ছাপূরণ। আর তাই দীর্ঘদিন ধরে বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বৃদ্ধ ৭২ বছর বয়সেও ভোটের লড়াইয়ে পিছপা হচ্ছেন না। হিংসা, বঞ্চনা, ব্যক্তিগত শোক ভুলে এ বছর ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) বীরভূমের ইলামবাজারে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন ৭২ বছরের প্রবীর কুমার রাহা। মনোনয়ন পেশ করার পরেই হুমকি এসেছিল তা প্রত্যাহারের জন্য। কিন্তু কমরেডের সাফ জবাব, মাথা উঁচু করে লড়বেন।
বীরভূমের (Birbhum) ইলামবাজারে ওষুধের দোকানে কাজ করে প্রায় ২০ বছর ধরে দিন গুজরান করেছেন প্রবীরবাবু। বছর দশ আগে ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রীকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে হয়েছেন সর্বস্বান্ত। অর্থের জন্য টোটোও বিক্রি করতে হয়েছে তাঁকে। নিয়মিত বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও এই পঞ্চায়েত ভোটেই লড়াইয়ে হাতেখড়ি। প্রার্থী হবার পর থেকেই দুষ্কৃতীদের ক্রমাগত আক্রমণ, হুমকিতে মাথা নত করেননি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারও করেননি। সিপিএমের (CPM) হয়ে ভোট লড়ার কারণে ওষুধের দোকানের কাজও হারিয়েছেন। আর তারপর আরও বিপাকে পড়েছেন ৭২-এর কমরেড। কীভাবে দিনযাপন করবেন? সেটাই এখন মাথাব্যথার মূল কারণ। ইলামবাজার এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে চর্চায় তাই সিপিএম প্রার্থী প্রবীর কুমার রাহা।
[আরও পড়ুন: ভোটপ্রচারে সর্বোচ্চ ক’টি গাড়ি ব্যবহার? কড়া নিয়ম বেঁধে দিল নির্বাচন কমিশন]
প্রবীরবাবুর কুমার রাহার কথায়, “প্রার্থী হওয়ার কারণেই নমিনেশন জমা করার পর থেকেই বৃদ্ধ বয়সেও ক্রমাগত হুমকি, আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে। কুড়ি বছর ধরে ওষুধের দোকানে কাজ করার পরও উপার্জনের (Earning) শেষ সম্বলটুকুও বন্ধ হয়ে গেল। কী খাব, ওষুধ কিভাবে কিনব, কিছুই বুঝতে পারছি না।”
[আরও পড়ুন: পাটনার বৈঠকের পর মণিপুর ইস্যুতে সর্বদলেও সম্মিলিত চাপ বিরোধীদের, ব্যাকফুটে কেন্দ্র]
কিন্তু কেন ওষুধের দোকানের কাজ চলে গেল? প্রার্থীর অভিযোগ, তাঁকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়ার জন্য দোকানদারকে চাপ দিচ্ছিল তৃণমূল (TMC) আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। যদিও দোকান কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়াই দিতে নারাজ। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন শুনে বারবার ‘নো কমেন্ট’ বলে এড়িয়ে গেলেন দোকান মালিক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। সবমিলিয়ে শূন্য হাতেই পঞ্চায়েতের লড়াইয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন বাহাত্তরের অনমনীয় প্রার্থী।