সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বেশ কয়েক বছর ধরে কংগ্রেস (Congress) প্রার্থী বউদির সমর্থনে ভোট প্রচার করে জয়ের হ্যাটট্রিক এনে দিয়েছিলেন দেওর। পরে দেওর তৃণমূলে (TMC) যোগ দেওয়ায় হেঁসেলই আলাদা হয়ে যায় উভয়ের। এবার ভোটের ময়দানে একে অপরের প্রতিপক্ষ দুই জা। একজন কংগ্রেসের হয়ে লড়ছেন, আরেকজন তৃণমূল প্রার্থী। পুরুলিয়ার (Purulia) বাঘমুন্ডির বুড়দা-কালিমাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মাওনিয়া সংসদ থেকে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ দুই পরিবারের দুই বউ।
এক বউ হরিপ্রিয়া সিং বাবু। আরেকজন রানিবালা সিং বাবু। হরিপ্রিয়া কংগ্রেস প্রার্থী। তিনি বাঘমুন্ডি ব্লকের বুড়দা-কালিমাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন তিনবারের সদস্য অর্থাৎ ১৫ বছর ধরে এই গ্রাম পঞ্চায়েতে সদস্য রয়েছেন। চতুর্থ জয়ের জন্য ঝাঁপাচ্ছেন।
[আরও পড়ুন: অবশেষে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেলেন নওশাদ, ভাঙড়ের বিধায়কের দায়িত্বে ৭ CRPF জওয়ান]
অন্যদিকে ছোট বউ রানিবালা তৃণমূলের প্রার্থী। তাঁর এই প্রথম রাজনীতিতে পা। আর তাতেই একেবারে প্রার্থী পদ! তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়ে জয়ের বিষয়ে ভীষণই আত্মবিশ্বাসী তিনি। তাঁর কথায়, “আমার কাছে অভিজ্ঞতা না থাকলেও দিদির উন্নয়ন প্রকল্পগুলো আছে। তা দিয়েই আমি জয়লাভ করব।”
হরিপ্রিয়া দেবীর কথায়, “তিন-তিনবার জিতে পঞ্চায়েত সদস্য হয়েছি। অনেক কাজ করেছি। তাই এবারও জয় আসবে। এই এলাকা কংগ্রেসের ঘাঁটি। এখানকার মানুষজন কংগ্রেস ছাড়া কিছু বোঝেন না।” এই দুই বউ একদিকে যেমন দেওয়াল লিখনের তদারকি করছেন। তেমনই সন্ধ্যা হলেই বাড়ি-বাড়ি প্রচার চলছে দলের পতাকা কাঁধে নিয়ে। সেই প্রচারে কে কত লোক টেনে নিজের পালে হাওয়া তুলতে পারে তাই নিয়েও জোর লড়াই দুই বউয়ের। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে চাইছেন না।
[আরও পড়ুন: ভাতারে ভোটের লড়াইয়ে দুই জা, একজনের প্রতীক ঘাসফুল, অন্যজন লড়ছেন হাত শিবিরের হয়ে]
তবে বড় বউ হরিপ্রিয়ার স্বামী হরেন্দ্রনাথ সিং বাবু এলাকার পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ। বর্তমানে বাঘমুন্ডি (Bagmundi) ব্লক কংগ্রেস সভাপতি। তৃণমূল প্রার্থী রানিবালা সিং বাবুর স্বামী পঙ্কজ সিং বাবু বলেন, “এটা ভুললে চলবে না বউদিকে জেতাতে আমি কম পরিশ্রম করিনি। আজ তৃণমূলে যোগ দিয়েছি বলেই দূরত্ব বেড়ে গিয়েছে। এমনকি হেঁসেল আলাদা হয়ে যায়। তবে ভোট কীভাবে করাতে হয় আমি ভাল করেই জানি। তাই এবার অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে স্ত্রী জিতবে।”