সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মা-বাবার কাছে নিজেদের প্রাণের চেয়েও বেশি সন্তান! মুম্বইয়ে লঞ্চডুবির ঘটনা তার জলজ্যান্ত সাক্ষী। দুর্ঘটনার সময় ডুবন্ত লঞ্চের মধ্যে থেকে বাবা-মায়েরা তাঁদের সন্তানদের সমুদ্রে ছুড়ে ফেলতে যাচ্ছিলেন, জানালেন উদ্ধারকারী এক সিআইএসএফ জওয়ান। তিনি জানান, লঞ্চ ডুবতে শুরু করলে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন বাবা-মায়েরা। সন্তানদের সমুদ্রে ছুড়ে দিলে তারা প্রাণে বাঁচতে পারে, এমনটাই মনে করেছিলেন অনেকে। যদিও নৌসেনা জওয়ানরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিভাবকদের আশ্বস্ত করলে তাঁরা ওই কাজ থেকে বিরত থাকেন।
গত বুধবার গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া সংলগ্ন ফেরিঘাট থেকে এলিফ্যান্টা গুহা যাওয়ার সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে 'নীলকমল' নামের একটি যাত্রিবাহী লঞ্চে। নৌসেনার স্পিডবোটের ধাক্কায় উলটে যায় 'নীলকমল'। ওই লঞ্চে ছিলেন ১১০ জন যাত্রী। লঞ্চডুবিতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়। এখনও নিখোঁজ এক শিশু। বছর ছত্রিশের সিআইএসএফ কনস্টেবল অমল সাবন্ত জানান, খবর পাওয়া পর্যন্ত বিকেল ৪টে নাগাদ দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পিটিআইকে তিনি জানান, "আমরা উপকূলের কাছে প্রতিদিনের মতোই টহল দিচ্ছিলাম। হঠাৎ ওয়াকিটকিতে খবর পাই, তিন-চার কিলোমিটার দূরে একটি যাত্রিবাহী লঞ্চ ডুবে যাচ্ছে। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছাই।" অমল যোগ করেন, "অনেকেই নিজেদের সন্তানদের প্রাণে বাঁচানোর আশায় জলে ছুড় দিতে যাচ্ছিলেন। আমরা তাঁদের আশ্বস্ত করি।" অমল জানান, শুরতে শিশুদের উদ্ধার করেন তাঁরা। এরপর মহিলা এবং পুরুষদের উদ্ধার করা হয়।
লঞ্চডুবির তদন্তে নিরাপত্তায় গাফিলতির বড়সড় অভিযোগ উঠেছে। সমস্ত যাত্রীকে লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয়নি। নৌসেনার স্পিডবোট চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। নৌসেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্পিডবোটের ইঞ্জিনে গোলমালের জেরে দুর্ঘটনা ঘটে। লঞ্চডুবির ঘটনায় পুলিশি জেরার মুখে পড়েছে নৌসেনা। সেনার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, ওই এলাকায় স্পিডবোট চালানোর অনুমতি কে দিল? ব্যস্ত সময়েই বা কেন স্পিডবোট পরীক্ষা করছিল নৌসেনা?