স্টাফ রিপোর্টার: আচমকা কাঁপছে হাত। চায়ের পেয়ালা ধরতে পারছেন না। অথচ মাথার চুল কুচকুচে কালো! পার্কিনসনস (Parkinson’s) শুধুমাত্র বয়স্কদের, এমন ধারণায় দশ গোল দিয়েছে ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেস (INK)। সম্প্রতি সেখানে এমন রোগীও এসেছেন যিনি সদ্য আঠাশের গণ্ডিতে। নিউরো রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের অধিকর্তা ডিরেক্টর ডা. সুপর্ণ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিরিশেও হতে পারে পার্কিনসনস।
ছোটবেলায় মাথায় আঘাত লাগলে তাকে হালকা ভাবে নেবেন না। সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করে নিন। তবে চিন্তা একটাই। তাতে গুরুতর চোট ধরা পড়লেও পার্কিনসনস হবে কি না সে ব্যাপারে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হওয়া যায় না। চিকিৎসক জানিয়েছেন, সিংহভাগ ক্ষেত্রেই এই অসুখ জিনঘটিত। মাথায় আঘাতও অন্যতম কারণ হতে পারে। জীবন দিয়ে সেই প্রমাণ দিয়েছেন বিশ্ববিখ্যাত বক্সার মহম্মদ আলি। বারবার বক্সিং গ্লাভসের আঘাত যাঁকে ঠেলে দিয়েছিল দুরারোগ্য পার্কিনসনসের দিকে।
[আরও পড়ুন: নিরামিষের ভরসায় খাদ্য বিপ্লব, মাংস ছাড়াও শরীর পাবে পর্যাপ্ত আয়রন, রইল উপায়]
শনিবার বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে পূর্ব ভারতের প্রথম রিহ্যাবিলিটেশন ইন পার্কিনসনস ডিজিজ চালু হল ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেস। শনিবার এই সেন্টারের উদ্বোধনে হাজির ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেসের চেয়ারম্যান আর পি সেনগুপ্ত, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী সর্বলোকানন্দ, ভাইস চেয়ারম্যান হৃষীকেশ কুমার, ডা. গৌর দাস।
ডা. সুপর্ণ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পার্কিনসনস পুরোপুরি সারিয়ে তোলা যায় না। তবে রিহ্যাবিলিটেশনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সেটাই করা হবে এই সেন্টারে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুঘটিত রোগের চিকিৎসা কেন্দ্রের অভাব রয়েছে কলকাতায়। সকলেই চায় বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেসে ভরতি হতে। কিন্তু সেখানে বেড সীমিত। এই মুহূর্তে ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেসে বিশ্বমানের চিকিৎসা মিলছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে দরিদ্ররাও এখানে চিকিৎসা করাতে পারছেন।
ঠিক কী কারণে মানুষ পার্কিনসনসে আক্রান্ত হন, তার সদুত্তর চিকিৎসাবিজ্ঞান এখনও পুরোপুরি দিতে পারেনি। ডা. সুপর্ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, একটা বিষয়ে চিকিৎসকরা নিশ্চিত। বংশে এই রোগের ইতিহাস থাকলে, পরের প্রজন্মের মধ্যে পার্কিনসনসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণ বেড়ে যায়।