বিক্রম রায়, কোচবিহার: কোচবিহারে কাকা-ভাইপোর রাজনৈতিক সম্পর্কে আগে যোজন মাইল দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। 'কাকা' রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও 'ভাইপো' পার্থপ্রতিম রায় আবার কাছাকাছি। তৃণমূলের দুই পোড়খাওয়া নেতা দিন কয়েক আগেই দেখা করেছিলেন। আজ শনিবার রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বাড়িতে গেলেন পার্থপ্রতিম রায়। রাজনৈতিক মহলে এই বিষয় যথেষ্ট চর্চা হচ্ছে বলে খবর।
রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক পার্থপ্রতিম ঘোষের বাবার। সেই সূত্রেই রক্তের না হলেও রবীন্দ্রনাথ ও পার্থপ্রতিমকে 'কাকা-ভাইপো' হিসেবে জানে কোচবিহারের রাজনৈতিক মহল। ২০১৬ সালে কোচবিহার লোকসভার সাংসদ মারা গেলে উপনির্বাচন হয়েছিল। সেই সময় রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কোচবিহারের জেলা তৃণমূলের সভাপতি। তখন পার্থপ্রতিমকে প্রার্থী করে তৃণমূল। তিনি জয়ীও হন। তারপর থেকেই দুজনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। পার্থপ্রতিমের একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিবাদ হয় বলে অন্দরের খবর।
কোচবিহারের তৃণমূল শিবির ভাগও হয়ে যায় বলে খবর। এই পরিস্থিতিতে ২০১৯ সালের লোকসভায় টিকিট পাননি পার্থপ্রতিম। তাঁর বদলে পরেশ অধিকারীকে প্রার্থী করা হয়েছিল। সেই নির্বাচনে হেরে যান তৃণমূল প্রার্থী। বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে জেতেন নিশীথ প্রামাণিক। জোড়া ফুলের অন্দরে আরও বিবাদ ছড়ায়। একসময় রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বদলে পার্থপ্রতিম রায়কে তৃণমূল জেলা সভাপতি করা হয়। দ্বন্দ্ব আরও প্রবল হয়। সেই আবহে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় তৃণমূল আরও ধাক্কা খায়। নটি আসনের মধ্যে সাতটি আসনই হাতছাড়া হয় রাজ্যের শাসক দলের।
কাকা-ভাইপো দুজনকেই কম গুরুত্ব পদে পাঠানো হয়। এখন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পুরসভার চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। আর পার্থপ্রতিম এনবিএসটিসির চেয়ারম্যান পদে। দীর্ঘ সময় পরে দুজনের মধ্যে যোগাযোগ হল। আগামী বছরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সেই হিসেবেই কি দুজনে অতীত ভুলে আবার যোগাযোগ করলেন? জল্পনা তুঙ্গে। যদিও দুজনেই দাবি করেছেন, এটি সম্পূর্ণ সৌজন্য সাক্ষাৎ। কোচবিহার থেকে এনবিএসটিসির নতুন বাস উদ্বোধন হবে। সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্যই রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বাড়ি গিয়েছিলেন পার্থপ্রতিম।