সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তফসিলি জাতির উপ-শ্রেণিবিভাগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায় নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই অল ইন্ডিয়া পাসমন্দা মুসলিম মেহাজ (এআইপিএমএম) এবং অন্যান্য মুসলিম গোষ্ঠী ১২টি মুসলিম গোষ্ঠীকে তফসিলি জাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে। এই সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় কমিশনকে চিঠিতে তাঁরা আরও বলেছে, তফসিলি জাতির তালিকাকে ধর্মনিরপেক্ষ করতে হবে এবং সারা দেশে দলিত মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের তফসিলি জাতির মর্যাদা দিতে হবে।
সূত্রের খবর, সংগঠনের প্রধান তথা প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ আলি আনোয়ার আনসারির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল শুক্রবার প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কে জি বালাকৃষ্ণনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিশনের সঙ্গে দেখা করেন। উল্লেখ্য, উর্দু থেকে উদ্ভূত ‘পাসমন্দা’ শব্দটি ভারতের সবচেয়ে নিপীড়িত, সব চেয়ে প্রান্তিক, সব চেয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন মুসলিমদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আনসারি একটি বিবৃতিতে বলেন, “আমরা আজ প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কে জি বালাকৃষ্ণনের নেতৃত্বে কমিশনের সঙ্গে দেখা করেছি এবং অনুরোধ করেছি যে কেন্দ্রকে অবশ্যই সুপ্রিম কোর্টের রায়কে মর্যাদা দিয়ে তালিকাকে ধর্মনিরপেক্ষ করতে হবে।”
[আরও পড়ুন: খুলে যাবে পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যপথ! উপত্যকার নির্বাচনী ইস্তেহারে ঘোষণা মেহবুবার]
প্রতিনিধি দল কমিশনকে আরও অবহিত করেছে যে সম্প্রদায়ের মধ্যে তাদের সংখ্যাগত শক্তি থাকা সত্ত্বেও পাসমন্দা মুসলিমদের চাকরি, আইনসভা এবং সরকার পরিচালিত সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সম্প্রদায়-চালিত মুসলিম সংস্থাগুলিতে কম প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়। আনসারি বলেন, “দলিত মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের তফসিলি জাতির তালিকায় যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ২০০৪ সাল থেকে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক পিটিশন দায়ের করা হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: নয়া পেনশন নীতিতে সিলমোহর কেন্দ্রের, কেমন সুবিধা পাবেন অবসরপ্রাপ্তরা?]
পসমন্দা মুসলিমদের এই দাবি খানিকটা হলেও অস্বস্তিতে ফেলবে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে। আসলে ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের আগে বিজেপি নিজেই পসমন্দা মুসলমানদের কাছে টানার চেষ্টা করেছে। সেবার বিধানসভা নির্বাচনে ভালোমতো পসমন্দা ভোট যায় বিজেপির খাতায়। সে সময় বিজেপি নেতারাই স্থানীয় স্তরে পসমন্দাদের তফসিলি জাতিভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন। গেরুয়া শিবিরের আশা ছিল ২০২৪ লোকসভাতেও সেই কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হয়নি। তাছাড়া মুসলিমদের তফসিলি জাতিভুক্ত করলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে। সব দিকে খেয়াল রেখে এগোনটাই এখন চ্যালেঞ্জ গেরুয়া শিবিরের।