শ্রীকান্ত, ঘাটাল: কারও হাতে স্যালাইনের বোতল, তো কারও হাতে চ্যানেল, আবার কারও আবার মাথায় ব্যান্ডেজ। কেউ বসে রয়েছেন গাছতলায় তো কেউ আবার বসে রয়েছেন হাসপাতালের বাগানে। অনেকেরই হাতে আবার হাতপাখা। এ দৃশ্য ঘাটালের (Ghatal) বীরসিংহ গ্রামীণ হাসপাতালের। প্রচণ্ড গরমে (Hot Summer) হাসপাতালের বেড ছেড়ে হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে এসে গাছতলা বা বাগানে দু’দণ্ড বসে হাওয়া খাচ্ছেন রোগীরা। তাঁদের অভিযোগ, বেলা ১২ টার পর হাসপাতালে টেকা দায়। হাসপাতালে বৈদ্যুতিন পাখা ঘুরছে তো ঘুরছেই। হাওয়া নেই। পাখা যেন থেকেও নেই। তাই বিকেল হলেই হাসপাতাল ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসছেন রোগীরা।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে হাতপাখা নাড়াতে দেখা গিয়েছিল ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতালের (Hospital) রোগীর পরিজনদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই নোটিস দিয়ে জানিয়েছিল, রোগীর পরিজনরা বাড়ি থেকে হাতপাখা বা টেবিল ফ্যান (Fan)নিয়ে রোগী ভরতি করাতে আসবেন। যা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। শেষমেষ আরও বেশ কয়েকটি পাখা লাগাতে বাধ্য হয়েছিলেন ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন: পাঞ্জাবের হয়ে খেলতে চেয়েছিলেন হরভজন, ধারাভাষ্য দেওয়ার সময়ে বেরিয়ে এল ভাজ্জির আক্ষেপ]
একইভাবে এই প্রচণ্ড দাবদাহে ঘাটালের বীরসিংহ গ্রামীণ হাসপাতালেও রোগীদের অবস্থা হয়েছে ক্ষীরপাইয়ের মতোই। এখানে হাসপাতাল ছেড়ে রোগীরা কেউ বসেছে গাছতলায় তো কেউ বসেছে বাগানে। ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন রোগী ও তাঁদের বাড়ির লোকেরা। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালে সুস্থ হতে এসে আরও বেশী অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তাঁরা । হাসপাতালের ওয়ার্ডে নেই পর্যাপ্ত পাখা ।
এ বিষয়ে ঘাটাল ব্লকের বিএমওএইচ (BMOH) প্রসূন জানা জানিয়েছেন, হাসপাতালের দোতলায় যে সমস্ত রোগীরা রয়েছেন তাঁদেরই সমস্যা হয়েছে বেশি । এই প্রচণ্ড দাবদাহে দোতলায় থাকা খুবই কষ্টদায়ক শেডের জন্য ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পঞ্চানন মন্ডল বলেন, ‘‘দোতলায় শেড না থাকায় তারপ্রবাহ নেমে আসছে । ফলে রোগীদের কষ্ট হওয়াটা স্বাভাবিক। শেডের জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদ ও জেলা প্রশাসনকেও জানিয়েছি । এই মুহূর্তে আমাদের করনীয় কিছু নেই । তবুও আপতকালীন কিছু করা যায় কি না বিডিওর সঙ্গে আলোচনা করব।’’
[আরও পড়ুন: জনতার পছন্দের প্রার্থী বিরোধী শিবিরের হলে তৃণমূলের পদক্ষেপ কী? জানালেন অভিষেক]
বিকেল হলেই রোগীরা বেরিয়ে পড়ছেন হাসপাতালের বাইরে। কারও হাতে স্যা্লাইনের বোতল তো কারও হাতে স্যালাইনের চ্যানেল লাগানো। ভিতরে থাকলে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে দাবি রোগীদের । তাই বাধ্য হয়েই তাঁরা বাইরে বেরিয়ে আসছেন। হাতে স্যালাইন নিয়ে গাছতলায় বসেছিলেন পঞ্চানন দোলই। তিনি বলেন, ”হাসপাতালে পাখা রয়েছে। পাখা ঘুরছেও। কিন্তু গায়ে লাগছে না। প্রচণ্ড গরম, থাকতে পারছি না। তাই বেরিয়ে এসেছি। ভিতরে থাকলে যেন আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছি । ’’