নন্দন দত্ত, সিউড়ি: পালটে গেল রক্তের (Blood) ব্যাগ। ফলে এক রোগীর রক্ত অন্যের শরীরে দেওয়ার অভিযোগ উঠল রামপুরহাটে। যার জেরে রক্তাল্পতায় ভোগা দুই রোগীকে তড়িঘড়ি সিসিইউতে ভরতি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করল রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ (Rampurhat Medical College Hospital)। যদিও দুই রোগীর পরিবার উপযুক্ত তদন্ত করে গাফিলতির জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে শাস্তির দাবি করেছে। মেডিক্যাল কলেজের সুপার পলাশ দাস জানান, “হয়তো কোথাও একটা ভুল হয়েছে। সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে। তবে আমরা বুঝতে পেরেই সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিয়েছি। আপাতত দু’জনে সুস্থ আছে।”
রক্তাল্পতায় ভোগা দু’জন রোগীর শরীরে দু’রকম রক্ত চালান হল রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের মহিলা বিভাগে। বৃহস্পতিবার নলহাটির নগড়া গ্রাম থেকে রক্তাল্পতা নিয়ে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে ভরতি হন আজিমা বিবি। একইভাবে রামপুরহাটের মাঝখন্ড গ্রাম থেকে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতির জন্য মেডিক্যাল কলেজে ভরতি হন কাজলরেখা চট্টোপাধ্যায়। পরিবারের দাবি, কাজলরেখার জন্য শুক্রবার সন্ধেয় ‘ও পজিটিভ’ রক্তের ব্যাগ হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে পৌঁছে দেওয়া হয়। সেই রক্ত দেওয়া শুরু হয় রাত্রিবেলা।
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশের কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, মৃত অন্তত ৮, ভিতরে আটকে বহু শ্রমিক]
কাজলরেখাদেবীর ছেলে নীতিশকান্তি চট্টোপাধ্যায় জানান, “মহিলাদের ওয়ার্ডে বেশিক্ষণ আমার থাকা উচিত নয়। তবু রক্ত চালানোর একঘন্টা পরে গিয়ে দেখি মায়ের ও পজিটিভের জায়গায় বি পজিটিভ রক্ত চলছে। অন্যদিকে একইসঙ্গে আজিমা বিবির বি পজিটিভের বদলে ও পজিটিভ রক্ত চলছে।” তিনি আরও জানান, প্রথমে নার্সদের সে কথা জানালেও তাঁরা কথার গুরুত্ব দেয়নি। পরে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে তাঁরা এসে ভুল স্বীকার করে রক্তের ব্যাগ খুনে নেন। রোগীর বউমা আজিজা সুলতানা জানান, “আমরা লেখাপড়া জানা বলে ভুলটা দেখতে পেলাম। যদি কেউ অল্প শিক্ষিত লোক হাসপাতালে আসে তাহলে তো বেঘোরে মরতে হবে।” কর্তব্যরত নার্সদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিও জানান তিনি।
আজিমা বিবির মেয়ে খালেদা বিবি জানান, “মা যখন ছটপট করছিল আমি তখন সিস্টারদের ডাকি। সঙ্গে সঙ্গে রক্ত খুলে সিসিইউ তে নিয়ে যায়। কাঁচের ঘরের ভিতরে মা শুয়ে আছে। কেমন আছে জানি না।” যদিও চিকিৎসকদের মতে ‘ও পজিটিভ’ রোগীর খুব একটা অসুবিধা হয়ত হবে না। তবে ‘বি পজিটিভ’ রোগীর শরীরে ‘ও পজিটিভ’ যাওয়ায় চিন্তা কিছুটা থেকেই গেল। নীতিশবাবুর অভিযোগ, “হাসপাতাল জোর করে ছুটি দিয়ে মাকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলছে। কিন্তু সেখানে কিছু অসুবিধা দেখা দিলে তার দায় কে নেবে?”