সাবিরুজ্জামান, লালবাগ: রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পে যখন রাজ্য জুড়ে প্রায় বারো হাজার কিমি রাস্তার নির্মান, পুননির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হল, ঠিক তখনই ভিন্ন চিত্র ভগবানগোলা থানার মহিষাস্থলী গ্রাম পঞ্চায়েতের রামকান্তপুর এলাকায়। বহু আবেদন নিবেদনের পরও মেলেনি রাস্তা। অবশেষে নিজেরাই চাঁদা তুলে রাস্তা নির্মানের কাজ শুরু করলেন স্থানীয়রা।
গোটা রাজ্যের পাশাপাশি ভগবানগোলা থানা এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) মঙ্গলবার পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পে মোট ষোলটি রাস্তার উদ্বোধন করেন। মোট চার কোটি সাতষট্টি টাকা ব্যয়ে এলাকার প্রায় সতেরো কিমি রাস্তা নির্মান ও সংস্কার করা হবে। ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রতিটিতে দু’টি করে রাস্তা সংস্কার অথবা পুননির্মাণ করা হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে বলা হয়। অভিযোগ ওই এলাকার চণ্ডিপুর-রামকান্তপুর মৌজার রামকান্তপুর পাকুড়তলা থেকে কুচগেরিয়া ধুমবলি যাওয়ার রাস্তা নির্মানের জন্য এলাকার পঞ্চায়েত তো বটেই ব্লক প্রশাসনের কাছে একাধিকবার আবেদন করেও কোনও সুরাহা হয়নি। এদিকে ওই রাস্তা দিয়ে লালবাগ-জিয়াগঞ্জ রাজ্য সড়ক লাগোয়া আমাইপাড়া থেকে কোলান এলাকায় বসবাসকারী মানুষের যাতায়াত। ফলে ওই রাস্তাটি নির্মান হলে কুচগেরিয়া, ছকন্নগর, বোলতলা, পাইকপাড়া, ধুমবলি, ঘোড়ারপুকুর পশ্চিমপাড়া, রামকান্তপুরের মতো দশ বারোটি গ্রামের মানুষ উপকৃত হবেন। সেই সঙ্গে বছরের বারোমাস স্কুল পড়ুয়া তো বটেই কৃষক তার উৎপাদিত ফসল সহজেই বাজারে নিয়ে গিয়ে নায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারবেন।
[আরও পড়ুন: মিলল না জামিন, কম্বল কাণ্ডে জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে আরও ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ আদালতের]
এই ব্যাপারে প্রবীন বাসিন্দা মাইনুল শেখ শামসুদ্দীন শেখ বলেন, “রাস্তার কারণে এখানকার মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি, একপাড়া থেকে আরেক পাড়া যেতে পারি না। একাধিকবার পঞ্চায়েত ও ব্লক অফিসে আবেদন করেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে নিজেরাই চাঁদা তুলে রাস্তা নির্মানের কাজ শুরু করি।” এদিন সাবেক রাস্তার উপর জেসিবি দিয়ে মাটি ফেলে রাস্তা উঁচু করা হয়। বারো ফুট চওড়া রাস্তা নির্মান করতে এলাকার দশ বারোটি গ্রামের মানুষ স্বেচ্ছায় চাঁদা দেন। আবার রাস্তা সোজা করতে কেউ নিজেদের জমির অংশ ছেড়ে দিয়েছেন। এই বিষয়ে আকবর আলী ও বাবলু সরকার বলেন, “পঞ্চায়েতের দিকে আর না তাকিয়ে পাড়ার লোকেদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা রাস্তার কাজ শুরু করি। এই কাজে মানুষ চাঁদা দিয়েছেন উৎসাহের সঙ্গে। আবার দুয়েক জন বাসিন্দা তাদের জমির কিছু অংশ রাস্তা নির্মানের জন্য স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিয়েছেন।”
এই বিষয়ে স্থানীয় বিডিও পুলক কান্তি মজুমদার বলেন, “এটা অত্যন্ত ভাল উদ্যোগ। তবে ওই এলাকার মানুষ রাস্তার জন্য আবেদন করেছিলেন কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। তাছাড়া যেখানে রাস্তা নির্মান হচ্ছে সেটি সরকারের জমি কিনা কিংবা রাস্তা হিসেবে চিহ্নিত আছে কিনা এসব দেখে প্রয়োজন হলে রাস্তাটিকে পরবর্তী প্ল্যানের সঙ্গে যুক্ত করে নেওয়া যাবে।”