অর্ণব আইচ: ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করেছেন, অথচ হাতে নগদ টাকা নেই? অথবা স্পট ফাইনে নগদ টাকা খরচ করতে রাজি নন? ইতস্তত করতে হবে না। ই-চালানে এবার ইউপিআই কোডেই মেটানো যাবে টাকা। মঙ্গলবার কলকাতার ট্রাফিকের কর্তাদের সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা করেন পুলিশ কমিশনার ও লালবাজারের অন্য কর্তারাও। আগামী বছর যাতে খুব তাড়াতাড়ি এই পদ্ধতি চালু করা যায়। বৈঠকে ছিলেন কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক গার্ডের আধিকারিকরাও।
ট্রাফিক পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, এখন জোড়াবাগান, হাওড়া ব্রিজ, সাউথ ও হেড কোয়ার্টার ট্রাফিক গার্ড ও সঙ্গে ইস্ট ট্রাফিক গার্ডের একটি অংশে ই-চালান চালু হয়েছে। ওই গার্ডগুলির সার্জেন্টরা ই-চালানের যন্ত্র হাতে নিয়েই শুরু করেছেন ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। এই বছরের শুরু থেকে বৃদ্ধি হয়েছে ট্রাফিক জরিমানা। তাই ট্রাফিক আইন ভেঙে গাড়ি বা বাইক, স্কুটি চালকরা অনেক সময়ই সমস্যার সামনে পড়েন। ই-চালান যন্ত্র ছাড়াও অন্যান্য ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্টরা স্পট ফাইন চাইলেও বহু গাড়ির চালক দিতে পারেন না টাকা। সেই ক্ষেত্রে চালকদের লাইসেন্স চাওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে সৃষ্টি হয় সমস্যার।
[আরও পড়ুন:জিতেন্দ্রপত্নীর ফ্ল্যাটে তালা, জেরা করতে গিয়ে পরপর দু’বার খালি হাতে ফিরল পুলিশ]
বহু ট্রাফিক গার্ডের ওসিই লালবাজারের ট্রাফিক কর্তাদের জানিয়েছেন যে, রাস্তায় গাড়ির চালক বা মালিকরা তৎক্ষণাৎ অনলাইনে জরিমানা মেটানোর দাবি করেন। কিন্তু সেই ব্যবস্থা না থাকায় তা সম্ভব হয় না। এবার থেকে সেই সমস্যা মেটাতেই লালবাজারের কর্তারা জরিমানার টাকা অনলাইনে মেটানোর পরিকল্পনা করতে থাকেন। ট্রাফিক কর্তাদের মতে, যে ট্রাফিক গার্ডগুলি জরিমানার ক্ষেত্রে ই-চালান দেয়, তাদের ক্ষেত্রে অনলাইনে ট্রাফিক জরিমানা নেওয়া সহজ। তাই লালবাজারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ই-চালান যন্ত্রের সঙ্গেই চালু করা হচ্ছে ইউপিআই কোডের ব্যবস্থা। সার্জেন্টের মোবাইলের মাধ্যমেও এই কোড ব্যবহার করা হতে পারে। কেউ জরিমানা দিতে চাইলে সার্জেন্টের ইউপিআই কোড স্ক্যান করলেই গাড়ির চালক বা মালিকের অ্যাকাউন্ট থেকে সরকারি তহবিলে চলে যাবে জরিমানার টাকা। তবে তার জন্য আরও প্রযুক্তির সাহায্য নিতে হবে। ই-চালান যন্ত্রের সঙ্গে ইউপিআই কোডের লিংক বা সামঞ্জস্য রাখতে হবে। এবার সেই কাজই শুরু করতে চলেছে লালবাজার।
যদিও ট্রাফিক আধিকারিকদের মতে, নেটওয়ার্কের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারলেই এই কাজ অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। এই ই-চালান কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় এনআইসি নিয়ন্ত্রণ করে। আসলে দিল্লিতে এনআইসির আলাদা সার্ভার থাকায় দিল্লি বা উত্তর ভারতের পুলিশের ক্ষেত্রে ই-চালানের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করতে কোনও সমস্যা হয় না। কিন্তু একই সার্ভার কাজ করে পূর্বাঞ্চলের ক্ষেত্রেও। তাই নেটওয়ার্ক সমস্যা কাটাতে যাতে পূর্বাঞ্চল বা কলকাতার জন্য আলাদা সার্ভার থাকে, সেই ব্যাপারে এনআইসি কর্তাদের সঙ্গে লালবাজারের কর্তারা কথাও বলতে পারেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।