আপনার লাইফ ইনসিওরেন্স কভার কি সব ফিনান্সিয়াস গোলস যথেষ্ট সুরক্ষিত রাখছে? টিম সঞ্চয়-এর তরফে আলোচনা করেছেন নীলাঞ্জন দে, বিমা উপদেষ্টা শ্রী রাজীব লোচন ঘোষের সঙ্গে। প্রশ্ন-উত্তরের সারাংশ নিচের প্রতিবেদনে।
সাধারণভাবে বলা চলে মানুষ ভালো রিটার্ন পেতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন, বিভিন্ন উপায়ে লগ্নি করছেন মার্কেটে। কিন্তু প্ল্যানিংয়ের আঙ্গিকে দেখলে নিজের লক্ষ্যপূরণের স্বার্থে কি যথাযথ ইনসিওরেন্স কভার নিচ্ছেন?
হ্যাঁ, গড়পড়তা ইনভেস্টর ইদানীং বড়-মাপের পারফম্যান্সের পিছনে দৌড়চ্ছেন। ইক্যুইটিতে তেমন রিটার্ন পেতেও শুরু করেছেন, তা তো দেখাই যাচ্ছে। তবে এখনও কিছু পুরনো ধারণা নিয়ে চলছেন অনেকে। এঁদের মধ্যে একটি বৃহৎ অংশ তাঁদের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। কখনও কি তাঁরা ভেবেছেন হঠাৎ করে কিছু হলে, উপার্জন বন্ধ হয়ে গেলে, কেমন ভাবে তাঁদের পরিবার অন্নসংস্থান করবেন? আমার অভিজ্ঞতা বলে, এমন ভাবনা সাধারণত করে ওঠা হয় না। হলেও তার পরিপ্রেক্ষিতে সদর্থক পরিকল্পিত উপায়ে বিমায় বিনিয়োগ করেন না তাঁরা। যথেষ্ট লাইফ কভার না থাকার জন্য যে অসুবিধা হবে, তা আর দুবার করে বলতে হবে না কাউকে। দেখুন, আপনার লগ্নি, ধরুন সিপের মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ডে যা করেন, তা তো বাজারের নিজস্ব নিয়মে চলবে। সময় দিলে তা নিশ্চয় ভালো রিটার্নও দিতে পারবে। এমনই আশা করা যায়। তবে গ্যারান্টি নেই কিছুতেই, এ তো খুব পরিষ্কার।
‘সোল আর্নিং মেম্বার’ অর্থাৎ একমাত্র উপার্জনকারীর অবর্তমানে কী হবে? পরিবার কীভাবে একইভাবে জীবন কাটাবে? কার্যত দেখা যায় তা প্রায় অসম্ভব বহু ক্ষেত্রেই। একইসঙ্গে জুড়তে হবে হোম লোন (বা অন্য লোন) থাকার সম্ভবনা। বড়-মাপের আউটস্ট্যান্ডিং লোন হলে তা কীভাবে মিটবে, কে নেবে সেই দায়িত্ব? সেই জন্য খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, যথাযথভাবে বিমা নিতেই হবে, তাহলে নিজের ‘ইনকাম রিপ্লেসমেন্ট’ সুচারুভাবে করে যেতে পারবেন গ্রাহক।
ধরা যাক জনৈক ব্যক্তি, যাঁর ৩৫ বছর বয়স, তিনি চলে গিয়েছেন। কিন্তু দেখা গেছে তাঁর বিমার কভার যথেষ্ট ছিল – মনে করুন এক কোটি টাকার কভার। এবার তুলনায় স্বল্প বয়সী গ্রাহককে হয়তো মাসে হাজার তিন-চার টাকাই কেবল প্রিমিয়াম দিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে হয়তো প্রতিদিনের হিসাবে একশো টাকা মাসে। যে সুরক্ষা তিনি পেলেন, তার তুলনায় এই অঙ্কটি খুব সামান্য, তাই নয় কি?
এই বিষয়ে বাজার কি ওয়াকিবহাল?
ব্যাপারটি যে মানুষ জানেন না, তা বলব না আমি। তবে যে বক্তব্যটি রয়েছে তাও স্বচ্ছ – অনেক বেশি আগ্রহী হতে হবে সাধারণ ইনভেস্টরদের। লাইফ ইনসিওরেন্স নেবেন না কোনও অবস্থাতেই, এমন ধারণা যদি বদ্ধমূল হয়, তাহলে তা দুঃখজনক। সৌভাগ্যের বিষয়, পরিস্থিতি দ্রুত বদলাচ্ছে। নতুন প্রজন্ম অনেক সচেতন বলে বুঝতে পারছি আমরা। সংশ্লিষ্ট সকলেই উৎসাহী। যেমন ধরুন এমপ্লয়াররা যাঁরা নিজের কর্মীদের এ ব্যপারে সহায়তা করছেন এবং সক্রিয় ভাবে সাহায্য করছেন।
প্রধানত যে কথাটি বলা দরকার এই পরিপ্রেক্ষিতে, তা হল, অল্পবয়সী গ্রাহকদের আরও সতর্ক থাকা উচিত হবে। কারণ তাঁদের অনেকেই সেভিংস করেন নিয়মিতভাবে। কিন্তু নিজের ফিনান্সিয়াল গোলসগুলো থেকে যাতে বিচ্যুত না হন, সে বিষয়ে যথেষ্ট সজাগ হন না। আজ যে ধরনের স্কিম আছে বিমা সংস্থাগুলোর দৌলতে, সেগুলোর মধ্যে সঠিক প্রোডাক্টগুলো বেছে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। বিভিন্ন স্কিম নিয়ে পর্যালোচনা করা দরকার, প্রয়োজনে আ্যাডভাইজারের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিন্ত হওয়াও দরকার।