আজকের দিনে হোম লোন অত্যন্ত জরুরি বিষয়। নতুন ঘর গড়তে চান যাঁরা, তাঁদের এই নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। তবে সদুত্তর পেতে হলে কিছু দিকে খেয়াল রাখতেই হবে। যে যে তথ্য হোম লোন নিতে গেলে না জানলেই নয়, এই লেখায় তালিকাবদ্ধ করলেন নীলাঞ্জন দে
ইদানীং আমরা হোম লোন সংক্রান্ত কয়েকটি প্রশ্ন পেয়েছি। একাধিক পাঠক জানতে চেয়েছেন গৃহঋণ সম্পর্কে। কীভাবে নিজের অর্থাৎ গ্রাহকের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা যায়, এমনই জিজ্ঞাসা আগ্রহীদের। এই নিয়েই এবারের আলোচনা। কয়েকটি সাধারণ প্রশ্ন গোড়াতেই করতে হবে যদি আপনি ঋণ নিতে ইচ্ছুক হন। সংক্ষেপে :
১. লোন নিচ্ছেন, সুদ কত?
২. কত দিনের প্রকল্প? অর্থাৎ ‘টার্ম’ কী?
৩. রোজগার যদি বাড়ে, তাহলে পেমেন্টের পরিমাণ কি বাড়াবেন?
৪. সঙ্গে কী বিমা নিয়েছেন? কী শর্তে?
৫. পার্টনার/স্পাউসের সঙ্গে জয়েন্টলি লোন নিয়েছেন কি?
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নীতির কথা মাথায় রাখুন। সর্ব প্রথমে এই নীতিই প্রধান নির্ধারক। পলিসি রেট এবং লোন রেট, প্রবলভাবে সম্পর্কিত। যদি ফ্লোটিং রেট হয় আপনার জন্য, তাহলে বিশেষভাবে এই কথাটি খেয়াল করবেন। খবরে প্রকাশ, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নীতির পরিবর্তন হয়নি। মানে, রেপো রেট সেই ৬.৫ শতাংশই আছে এখনও। সুদ রিসেট করা হবে আপনার জন্য, জানেনই তো! যদি সেমি-অ্যানুয়াল হয়, তাহলে এক রকম।
[আরও পড়ুন: শুধু রেটিং নয়, লগ্নির আগে নজরে রাখুন নানা ঝুঁকিও]
যদি কোয়ার্টালি হয়, তাহলে অন্য রকম। তফাতট বুঝে নেবেন। আপনার লোনের মেয়াদ কি খুব লম্বা? তাহলে কিন্তু সব মিলিয়ে বেশি চাপ–ইন্টারেস্ট রেট তো শেষ পর্যন্ত গুনতেই হবে আপনাকে। সাধারণ উপার্জনকারীরা (এমন অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে), প্রথমেই বড় বাজেটের কথা ভেবে ফেলেন। লম্বা মেয়াদের প্রশ্নটি কিন্তু খুব প্রাসঙ্গিক তাঁদের জন্য, বিশেষ করে যাঁরা তুলনায় অল্পবয়েসি। যদি, ধরা যাক, ১৫-২৫ বছরের কথা ভেবে রাখেন, তাহলে পরের দিকে ইএমআই সংক্রান্ত নিয়ম বুঝে নিয়ে মাসিক বাজেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। যদি বছরে ৫-১০ শতাংশ ইএমআই বাড়াতে পারেন, তাহলে আপনারই লাভ। টার্ম কত দিনের, তা এই প্রসঙ্গে খুব জরুরি শর্ত হয়ে দাঁড়ায়। স্বল্প দিনের লোন হলে অনেক ক্ষেত্রে লাভবান হবেন গ্রাহক।
ইনসিওরেন্স কি সঙ্গে আছে? ইদানিং এই প্রশ্নও খুব মাথাচাড়া দিচ্ছে। যদি বড় মাপের লোন হয়, তাহলে হয়তো বিমার বিষয়টি কার্যকরী হবে। হঠাৎ গ্রাহকের কিছু যদি হয়ে যায়, তাহলে তাঁর উপর নির্ভরশীল মানুষরা (পরিবার) বিপদে পড়বেন না। তবে হ্যাঁ, কিছু ক্ষেত্রে বিমা নিতে বলছেন লোন সংস্থা একটু বেশিই, অথবা শর্ত হিসাবে দেখানো হচ্ছে লোন প্রকল্পে। তাই গ্রাহকরা যদি আলাদাভাবে টার্ম প্ল্যান কিনে নেন, এই ব্যাপারটি এড়িয়ে যেতে পারবেন বলে মনে হয়। লোন কোম্পানি বদল করলেও সেই ক্ষেত্রে তেমন কোনও অসুবিধা হয় না।
স্পাউস অথবা পার্টনারের সঙ্গে জয়েন্ট লোনও খুব কার্যকরী হয়ে থাকে। অনেকেই এই প্রসঙ্গটি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এই বিষয়ে এগিয়ে যেতে উৎসাহ দিয়েছেন লোন কোম্পানিগুলো। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক এবং অন্য সংস্থার রেট পাশাপাশি রেখে মিলিয়ে দেখতে পারেন। আনুসঙ্গিক শর্তগুলোরও তুলনামূলক চর্চা করবেন।