স্বাস্থ্যবিমার গুরুত্ব যে কতখানি, তা আর আজ নতুন করে ব্যাখ্যা করা নিষ্প্রয়োজন। কিন্তু কোন সময়ে বিমা করা হচ্ছে, এর উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। বিশেষ করে কর্মরতা মহিলাদের ক্ষেত্রে। তিরিশের গণ্ডি স্পর্শ করার আগেই যদি মহিলারা স্বাস্থ্যবিমা করার ব্যাপারে সচেতন হন, তাহলে আখেরে লাভ আপনাদেরই। জানাচ্ছেন অমিতাভ জৈন, সিওও স্টার হেলথ অ্যান্ড অ্যালায়েড ইনসিওরেন্স
প্রশ্ন: তিরিশের কোঠা স্পর্শ করার আগে স্বাস্থ্যবিমা করা মহিলাদের জন্য কেন জরুরি?
উত্তর: যুগটা ‘মিলেনিয়াল’। ইনস্টা সংস্কৃতির। এখনকার কর্মরতা মেয়েরা বোঝে #GirlBoss-এর অর্থ। একদিকে যেখানে কেরিয়ারে উন্নতির সিঁড়ি তরতরিয়ে উঠছে তারা, ভাঙছে কর্মক্ষেত্রের পুরনো ধ্যানধারণার একের পর এক গ্লাস সিলিং, ঠিক সেখানেই হয়তো এসবের মধ্যে কোথাও গিয়ে ধাক্কা খাচ্ছে তাদের স্বাস্থ্যের যত্ন। সকলে না হলেও আজকের ‘ওয়ার্কিং ওম্যান’-এর একটা বড় অংশ কেরিয়ারে দ্রুত এগোতে গিয়ে সচেতনভাবেই অবহেলা করে শরীর-স্বাস্থ্যকে। অনেকেরই হেলথ ইনসিওরেন্স করা নেই। এর গুরুত্বও বোঝেন না। অথচ অকস্মাৎ ঘনিয়ে আসা কোনও ‘মেডিক্যাল এমার্জেন্সি’ এক লহমায় তছনছ করে দিতে পারে গোটা জীবন। বিপদ এলে তবে সাবধান হওয়ার বদলে আগেভাগে সচেতন হওয়াটাই তো ‘স্মার্ট ওম্যান’-এর লক্ষণ? নয় কি?
কেন বয়স ৩০ ছোঁয়ার আগে একবিংশ শতকের মেয়েদের স্বাস্থ্যবিমা করা উচিত? কারণ ব্যাখ্যা করছেন স্টার হেলথ অ্যান্ড অ্যালায়েড ইনসিওরেন্সের চিফ অপারেটিং অফিসার অমিতাভ জৈন।
[আরও পড়ুন: কোন সময় কীভাবে লগ্নি করা উচিত? জেনে নিন সঠিক পথ]
ক) ভবিষ্যতের নিরাপত্তা:
তিরিশে পা রাখার আগে স্বাস্থ্যবিমায় লগ্নি করলে মেলে এক গুচ্ছ সুফল। লো প্রিমিয়াম যেমন পাবেন, তেমনই মিলবে কমপ্রিহেনসিভ কভারেজ। স্বাস্থ্যবিমা আগেভাগে করে রাখলে একদিকে যেমন বহু দুরারোগ্য ব্যধির চিকিৎসায় পাবেন ছাড়, তেমনই এর ফলে বাঁচবে আপনার সেভিংস, যা আপনি কাজে লাগাতে পারবেন অন্য কোনও জরুরি কাজে।
খ) কেরিয়ারের গ্রোথ:
এখনকার দিনে কেরিয়ার সফলভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কতটা জরুরি, প্রতিটি কর্মরতা মেয়েরাই তা হাড়ে হাড়ে বোঝেন। কিন্তু রোগ-জ্বালা তো বলে কয়ে আসে না! হঠাৎ কোনও শারীরিক ব্যধি এসে যাতে আপনার কেরিয়ারের বিকাশে অনভিপ্রেত বাধা না সৃষ্টি করতে পারে, তার জন্য স্বাস্থ্যবিমা করে রাখা জরুরি। এর ফলে আপনি নিশ্চিন্তভাবে আপনার কেরিয়ার গোলস পূর্ণ করার দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন।
[আরও পড়ুন: আর্থিক নিরাপত্তার বিকল্প নেই, হবেও না, পরামর্শ মেনে পদক্ষেপ করুন]
গ) মাতৃত্বের দায়িত্ব:
কেরিয়ার-সচেতন এযুগের মহিলা বলে পরবর্তীতে মাতৃত্বের চিন্তা মাথায় নেই, এমনটা সকল মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায় না। অনেকেই এই বিষয়ে ভাবেন এবং পরিকল্পনা করেন, নির্দিষ্ট সময়ে এই নিয়ে এগোবেন। সেক্ষেত্রে বয়স ত্রিশের গণ্ডি স্পর্শ করার আগে যদি স্বাস্থ্যবিমা করে রাখেন, তাহলে দেখবেন আখেরে লাভই হবে। কারণ বহু সংস্থার বিমায় এই নিয়ে বিশেষ পদক্ষেপ থাকে, থাকে স্ট্রেস কাটানোর জন্য ওয়েলনেস প্রোগ্রামের ব্যবস্থাও।
ঘ) অভিনব সুযোগ-সুবিধা:
অধুনা বহু সংস্থাই তাদের স্বাস্থ্যবিমার অফারে কর্মরতা মহিলাদের নানা ধরনের অভিনব সুযোগসুবিধা দিয়ে থাকে। যেমন কুইক ক্যাশলেস ক্লেইম, নিউ বর্ন কেয়ার কভারেজ, ওয়েলনেস রিয়ার্ডস, টেলিমেডিসিন সার্ভিসেস প্রভৃতি। কাজেই এগুলোর সুবিধা নিতে গেলে এবং ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখতে গেলে সময় থাকতে থাকতে স্বাস্থ্যবিমায় লগ্নির কথা ভেবে দেখতেই পারেন।