বাজার অর্থনীতিতে ফ্লেক্সি ক্যাপের তাৎপর্য অপরিসীম। এই ধরনের ফান্ডগুলো সাধারণত ওপেন-এন্ড হওয়ায় গ্রাহকরা যে কোনও সময়, প্রয়োজন বুঝে এক্সিট করতে পারেন। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের লগ্নিকারীদের জন্য এই ধরনের ফান্ড যে আদর্শ, এমন নিদান বহুবার দিয়েছেন ট্রেড পণ্ডিতরা। এই নিয়ে বিশদ তথ্য সংকলনে লগ্নি পরামর্শদাতা অভিজিৎ পোদ্দার
দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে ইক্যুইটিতে লগ্নি করার আকর্ষণই আলাদা। ‘সঞ্চয়’ পড়ে পাঠকরা নিশ্চয়ই বিষয়টির সঙ্গে সহমত হবেন। বারে বারে কথাটি প্রমাণিত হয়েছে। একটি ডাইভারসিফায়েড পোর্টফোলিও, যেখানে বিভিন্ন ধরনের সেক্টরের উপস্থিতি আছে প্রায় সব শ্রেণির কাছে গ্রহণযোগ্য হবে, বিশেষ যাঁরা স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করে (ঝুঁকি সত্বেও) রিটার্ন পেতে চান। এমন ইনভেস্টরদের হাতে যে অস্ত্রটি আছে, যার প্রয়োগ লাভবান হবেন তাঁরা, তার নাম ফ্লেক্সি ক্যাপ ফান্ড। বৃহৎ, মাঝারি এবং ক্ষুদ্র – এই তিন শ্রেণির মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন এখানে পাবেন। লং টার্মের জন্য অনেকেই এই জাতীয় ফান্ডকে আদর্শ লগ্নির তালিকায় রাখেন। নূন্যতম ৬৫% অ্যাসেট ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করা হয়, কার্যক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ফান্ড ম্যানেজার নিজস্ব কৌশলের ভিত্তিতে যথাযথ অ্যালোকেশনের চেষ্টা করেন।
আমার মতে, সাধারণভাবে লগ্নিকারীরা অন্তত পাঁচ বছর তাঁদের টাকা এই ধরনের ফ্লেক্সি ক্যাপ ফান্ডে যদি রাখতে পারেন, তাহলে উপকৃত হবেন। মনে রাখুন, নিজের ইনভেস্টমেন্ট হোরাইজনের দিকে নজর রাখতে হবে। তবে ফ্লেক্সি ক্যাপ ফান্ডগুলো সবই ওপেন-এন্ড। তার ফলে প্রয়োজনে যে কোনও দিন এক্সিট করাও সম্ভব হবে তাঁদের পক্ষে। এছাড়াও খেয়াল রাখতে হবে আরও একটি বিশেষ ব্যাপারে – কম্পাউন্ডিং। যদি দীর্ঘ ১০-১৫ বছর ধরে লগ্নি টিকিয়ে রাখেন, তাহলে যথেষ্ট লাভবান হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। হ্যাঁ, এই সময়ের মধ্যে ইক্যুইটি মার্কেট ওঠা-নামা করবেই। অস্থিরতা স্টক মার্কেটে খুব স্বাভাবিক ঘটনা বলে ধরে নিতে হবে। আপনার ইনভেস্টমেন্ট চলাকালীন তেমন ঘটনা পর্যানুক্রমে ঘটতেই থাকবে। চিন্তিত বা ভীত হলে কিন্তু চলবে না, এ কথাও জোর গলায় বলা দরকার।
আমি অনেক ক্ষেত্রে দেখেছি লগ্নিকারীরা নিজেদের অ্যালোকেশন ঠিক কীভাবে করবেন, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় ইতস্তত করেন। লার্জ, মিড, স্মল ক্যাপ – কোথায় কত টাকা অ্যালোকেশন করলে ভালো হয়, এই প্রশ্নটি তখন বিরাট বড় আকার ধারণ করে। তাঁদের জন্য আমার একটি সহজ সমাধান আছে। ফ্লেক্সি ক্যাপে বিনিয়োগ করুন তাঁরা। ফান্ড ম্যানেজার আপনার হয়ে নিজের স্ট্র্যাটেজি মেনে পরিমাণ ঠিক করবেন, যথাযথভাবে বন্টন করবেন বিভিন্ন মার্কেট ক্যাম্পের মধ্যে।
এবার আসি একটি অন্য (কিন্তু একেবারেই আমাদের বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত) প্রসঙ্গে। আমি নতুন প্রজন্মের লগ্নিকারীর কথা বলছি। ফ্লেক্সি ক্যাপ ফান্ড বেছে নিন তাঁরা, কারণ বিভিন্ন সেক্টরের ছোঁয়া পাবেন একত্রে একটি পোর্টফোলিও মধ্যে। ভালো ফান্ড ম্যানেজাররা বড় মাপের রিটার্ন আনতে সক্ষম হবেন। নতুন লগ্নিকারীর জন্য প্রাথমিক বিনিয়োগ হতে পারে ফ্লেক্সিক্যাপ। ডাইভারসিফিকেশনের কোনও বিকল্প নেই। তাই কথাটি বারে বারে বলে থাকি আমরা। আপ্তবাক্যটির শক্তি পরখ করা যায় ফ্লেক্সিক্যাপের মাধ্যমে বলে আমি মনে করি। বিভিন্ন ফ্লেক্সি ক্যাপের তুলনামূলক পর্যালোচনা করুন। আপনাদের ধারণা আরও স্পষ্ট হবে পরিসংখ্যানগুলো খুঁটিয়ে দেখলে।