ক্যাপেক্স। পুরো নাম ক্যাপিটাল এক্সপেনডিচার। আইসিআইসিআই সিকিউরিটিজ সম্প্রতি একটি রেডিমেড পোর্টফোলিও বাজারে এনেছে, যার নাম রাইজিং ক্যাপেক্স। সংস্থার দাবি, লগ্নিকারীদের মধ্যে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে এই ধরনের ফান্ড নিয়ে। লিখছেন নীলাঞ্জন দে
রাইজিং ক্যাপেক্স নামে রেডিমেড পোর্টেফোলিওর কথা জানাচ্ছে আইসিআইসিআই সিকুইরিটিজ। কোনও মার্কেট ক্যাপ সংক্রান্ত লিমিট নেই, তবে ক্যাপেক্স-নির্ভর থিম অবশ্যই প্রাধান্য পাচ্ছে এই ক্ষেত্রে। ব্রোকিং হাউসটির মতে, ক্যাপেক্স নিয়ে উৎসাহী হওয়ার যথেষ্ট কারণ থাকবে আগামিদিনে, তাই সাধারণ বিনিয়োগকারীর পক্ষে এই থিম সম্বন্ধে আগ্রহ থাকা স্বাভাবিক। রিটার্ন ভালো পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, এ-ও বলছেন সংস্থার কর্তৃপক্ষ।
১. ক্যাপেক্স, অর্থাৎ ক্যাপিটাল এক্সপেনডিচার। লক্ষ্য যদি আমাদের ‘ফাইভ ট্রিলিয়ন ইকোনমি’ হয়, তাহলে ক্যাপেক্সের ভূমিকা হবে অনস্বীকার্য।
২. উপর্যুপরি বাজেটে ক্যাপেক্সের উপর জোর দিয়েছেন সরকার। নীতি নির্ধারণের সময়ও এই বিষয়ে নজর রাখছেন আমাদের প্ল্যানাররা।
৩. ‘ক্যাপেক্স সাইকেল’ ইতিবাচক হলে তা অর্থনীতির পক্ষে ভালো, কর্পোরেট সংস্থাগুলো তার সুবিধা সামগ্রিকভাবে পাবে এমন আশা রাখে।
৪. ক্যাপিটাল গুডস, বিশেষভাবে বলতে গেলে, একান্তভাবে – সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে থাকবে এই জন্য।
রাইজিং ক্যাপেক্স পোর্টফোলিওতে থাকবে হাতে-বাছাই করা কিছু স্টক। এগুলোতে লগ্নি করলে ইনভেস্টররা পেতে পারেন দীর্ঘমেয়াদী লাভ, এমনই বলা হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। সঙ্গের চার্ট দেখুন, প্রথম পাঁচটি স্টক চিহ্নিত করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: বাজারে রয়েছে নানা রিটায়ারমেন্ট ফান্ড, আলাদা কী কী সুযোগ-সুবিধা পাবেন?]
কী ধরনের সেক্টরে বিনিয়োগ হতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে পরের তালিকায়।
নিফটি ৫০০ সূচকের সঙ্গে তুলনাও টেনেছেন ব্রোকিং সংস্থার পরিচালকরা। এই বড় বেঞ্চমার্কটিকে বেশ ভালোভাবেই ছাপিয়ে গিয়েছে রাইজিং ক্যাপেক্সের পারফর্ম্যান্স, এমনই দাবি তাঁদের। গত জুন ২০২১ সালে আসা পোর্টফোলিওটির রিটার্ন এসেছে প্রায় ৩৭% গত মাসের শেষে।
ঘটনাচক্রে, এই শ্রেণির স্টকের তালিকায় বেশ কিছু ইনফ্রা, ক্যাপিটাল গুডস, কমোডিটি ইত্যাদি সংস্থা রয়েছে। এগুলোর এক বড় অংশ সাম্প্রতিককালে নানা কারণে সূচকের গতিবিধি নির্ধারণ করছে। ‘ইনডেক্স মুভারস’-এর সর্বশেষ তালিকায় এই ধারণা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ছে। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের মতে এই তালিকায় আছে বড় ব্যাঙ্ক, ইনফ্রা, ইনফোটেক, অটো এবং কনজিউমার কোম্পানি। এক্সচেঞ্জের প্রকাশিত তালিকায় (পয়লা এপ্রিল, ২০২৪) যা রয়েছে, তার প্রথম দশটি নাম :
কমোডিটি, ইনফ্রা, ক্যাপিটাল গুডস ইত্যাদিতে একত্রে লগ্নি করতে চাইলে বিনিয়োগকারীরা বাছাই করা ইক্যুইটি ফান্ড নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে পারেন। অথবা আলাদাভাবে থিম-নির্ভর ফান্ডও বেছে নিতে পারেন তাঁরা। বিশদে না গিয়ে তিনটি ফান্ডের কথা আমরা তুলে ধরছি। কোনও পক্ষপাত নেই, কেবল উদাহরণ হিসাবে দেখতে হবে এগুলো।
১. Axis India Manufacturing Fund
২. ICICI Prudential Commodities Fund
৩. Tata Housing Oppoturnities Fund.
[আরও পড়ুন: অবসরেও থাকুন সেরা ফর্মে! স্বাস্থ্যবিমা থেকে পেনশন প্ল্যানিং, শুরু করুন এখনই]
যথাক্রমে তিনটি প্রধান থিম ম্যানুফ্যাকচারিং, কমোডিটি, এবং হাউজিং। শেষেরটি, অর্থাৎ হাউজিং ভিত্তিক ফান্ডটি, শুনতে স্বল্প-পরিসর, তবে এর পোর্টফোলিওতে সংশ্লিষ্ট অন্য স্টকও পাওয়া যাবে বলে জানা যাচ্ছে। এগুলি সবই পুরোদস্তুর ইক্যুইটি ফান্ড। এবং ওপেন-এন্ডও বটে–অর্থাৎ যে কোনও দিন নিজের ইউনিট বিক্রি করে দিতে পারেন লগ্নিকারী। ফান্ড হাউসগুলোর বক্তব্য অনুযায়ী, মধ্য এবং দীর্ঘ মেয়াদের জন্য কিনতে পারেন সাধারণ লগ্নিকারীরা। এছাড়াও সিপের মাধ্যমে ধীরে ধীরে কিনতে পারেন প্রতি মাসে অথবা ঘনঘন। প্রত্যেকবার আলাদা ন্যাভে কিনতে হবে, তবে সময় দিলে বড় মাপের তহবিল গঠন করতে পারেন লগ্নিকারীরা। যাঁরা মূলত থিম নিয়ে আগ্রহী, তাঁদের জন্য আছে বিভিন্ন নজরকাড়া থিম। ফার্মাসিউটিক্যালস, ট্রান্সপোর্টেশন, এনার্জি অথবা অটোমোবাইল নিয়ে চর্চা হয়েছে আমাদের পাতায়। একেবারে হালে আসা কিছু থিম ইতিমধ্যে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে সাধারণ লগ্নিকারীর।