অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের দুনিয়ায় এক ঝাঁক নতুন ‘মুখ’-এর সমাগম। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নতুন প্রজন্মের লগ্নিকারীদের কাছে এই নতুন ‘প্লেয়ার’দের গ্রহণযোগ্যতা ক্রমশ বাড়ছে। ফলত বাড়ছে জনপ্রিয়তাও। কেন? উত্তর খুঁজে তালিকাবদ্ধ করল টিম সঞ্চয়
পঞ্চাশের কাছাকাছি। অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের দুনিয়ায় প্লেয়ারদের সংখ্যা এমনই। গত কয়েক বছরে মিছিলে সামিল হয়েছে একগুচ্ছ নতুন সংস্থা। সূক্ষ্ম বিচারে তাই দুই ভাগে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে পুরো ফান্ডের দুনিয়া। পুরনো এবং নতুন। শেষ শ্রেণিতে আমরা রাখছি কেবল গত পাঁচ-ছয় সালে এই ব্যবসায় পা রাখা প্লেয়ারদের। উদাহরণ – হেলিওস, হোয়াইটওক, ওল্ডব্রিজ, বাজাজ, স্যামকো, কোয়ান্ট। ইদানীং কেমন ভাবে নিজেদের সক্রিয় রেখেছেন এই জাতীয় কোম্পানিগুলোর কর্তৃপক্ষ? এই প্রশ্নের উত্তরে প্রথমেই উঠে আসে যে বিষয়টি, সেই নতুন ফান্ডের প্রস্তাব নিয়ে এবারের আলোচনা। সঙ্গের পয়েন্টগুলো এই প্রসঙ্গে জরুরি।
১. ইনভেস্টররা একাধিক নবাগত প্লেয়ারদের সঙ্গে পরিচিতি বাড়ালে ভালো হবে। নতুন চিন্তা-ভাবনার আবির্ভাব হতে পারে এদের হাত ধরেই।
২. পুরনো, চালু ফান্ডের জগতে বৈচিত্র্য আনতে সক্ষম হয়েছে নতুনরা। এসেছে কয়েকটি স্মার্ট কৌশল, সঙ্গত দিয়েছে আধুনিক যুগের বিপণনের কৌশলও। প্রযুক্তির ব্যবহারে দ্রুত ইনভেস্টরদের কাছে পৌঁছেছে নতুনরা।
৩. সমসাময়িকদের দৌলতে আসছে ভালো প্রোডাক্টও। এক্ষেত্রে হালের কয়েকটি এনএফওর দৃষ্টান্ত দেওয়া যেতে পারে। এই লেখায় দুটি বিশেষ ফান্ডের কথা বলা হয়েছে, কোনওরকম পক্ষপাত ছাড়াই।
৪. ইনডেক্স ফান্ড তথা ইটিএফ ধরলে, বৈচিত্র্য আরও বাড়াতে সক্ষম হবে ফান্ড হাউসগুলো। এখানে নতুনদের ভূমিকা হবে বেশ বড়-মাপের, এমনই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
[আরও পড়ুন: গ্রাহকদের নজরে মেটাল স্টক, ক্রমশ বাড়ছে চাহিদা]
দুই নতুন প্লেয়ারের সাম্প্রতিক দুই প্রস্তাব উদাহরণ হিসাবে বেছে নিয়েছি :
(ক) Helios Financial Services Fund
(খ) White Oak Capital Special Opportunities Fund
বিশেষজ্ঞের মতামত :
১. নতুন বা পুরনো, দুই মিলিয়েই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের বিস্তৃত ক্ষেত্র। আগামিদিনে আরও নতুন প্লেয়ার আসার সম্ভাবনা তো আছেই। তাই বিকল্পের সংখ্যা বাড়তে বাধ্য ইনভেস্টরদের জন্য।
২. নতুন প্রজন্মের কাছে প্রযুক্তির ব্যবহার স্বাভাবিক, তাই বিভিন্ন টেকনোলজি-সমৃদ্ধ পদ্ধতি আসবে লগ্নির বাজারে। এখানে অগ্রণী ভূমিকায় দেখা যেতে পারে আধুনিক যুগের প্লেয়ারদের।
৩. পারফম্যান্সের পরিসংখ্যানই শেষ কথা বলবে। পুরনোই হোক বা নতুন, কিভাবে রিটার্ন আসছে, ইনভেস্টরদের মতে, তাই-ই বিবেচ্য হবে। সেই পারফর্ম্যান্স যথেষ্ট স্থায়ী কি না, তা-ও খুব জরুরি শর্ত হয়ে উঠবে। যে ফান্ড ম্যানেজার বিভিন্ন মার্কেট সাইকেলে নিজের রিটার্ন ভালো দিতে পারেন, তিনিই হবেন আগামিদিনের চ্যাম্পিয়ন।
৪. প্লেয়ার যেমনই হোক, সেবির কঠোর নিয়ম তাকে মেনে চলতেই হবে। স্বচ্ছভাবে ফান্ড পরিচালনা করেন, এমন ফান্ড কর্তৃপক্ষের সন্ধান করবেন এ যুগের লগ্নিকারীর দল।
৫. এছাড়াও বিবেচ্য হবে প্রোডাক্টের বৈচিত্র্য। ইদানিং ইনডেক্স ফান্ড এবং এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড, দুই-ই খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। নতুন প্লেয়ারদের একাংশ হয়তো কিছুটা সেই দিকেই ঝুঁকবে বলে মনে হয়। তবে অ্যাক্টিভ পদ্ধতিতে পরিচালনা করা ফান্ড ভবিষ্যতে ট্রেন্ডের নির্ধারক হবে কারণ ইনডেক্সকে হারিয়ে গ্রোথ আনাটাই মূল চ্যালেঞ্জ।