সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানের (Pakistan) প্রাক্তন সেনাশাসক পারভেজ মুশারফের (Pervez Musharraf) শারীরিক অবস্থা নিয়ে তুঙ্গে জল্পনা। গুরুতর অসুস্থ হয়ে গত তিন সপ্তাহ ধরেই তিনি ভরতি রয়েছেন হাসপাতালে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়ে দিলেন, মুশারফের দেশে ফিরতে কোনও বাধা নেই।
ঠিক কী জানাচ্ছেন তিনি? টুইটারে তাঁকে লিখতে দেখা যায়, ”জেনারেল মুশারফের এমন শারীরিক অবস্থায় তাঁর দেশে ফিরতে কোনও বাধা থাকা উচিত নয়। আগের ঘটনাবলির কারণে এতে কোনও বাধা থাকার কথা নয়। আল্লাহ তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতি করুন। এবং তিনি জীবনের শেষ সময়টা গরিমার সঙ্গে এখানে কাটান।”
[আরও পড়ুন: নাবালিকাকে গণধর্ষণ, নির্যাতনের ভিডিও লাইভ করল অভিযুক্তরা! চাঞ্চল্য মধ্যপ্রদেশে]
উল্লেখ্য, গুরুতর অসুস্থ মুশারফ। গত শুক্রবার তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে বলে শোনা যায়। এদিকে, সংবাদমাধ্যমের একাংশে মুশারফের মৃত্যুর খবর আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পরে তাঁর পরিবারের তরফে জানানো হয়, মুশারফকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়নি। কিন্তু গত ৩ সপ্তাহ ধরেই দুবাইয়ের এক মার্কিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুশারফ। ২০১৮ সালে প্রথমবার মুশারফের অসুস্থতার খবর প্রকাশ্যে আসে। জানা যায়, বিরল অ্যামাইলয়েডিওসিসে ভুগছেন মুশারফ। শরীরে অ্যামিলয়েড প্রোটিনের উপস্থিতির কারণে এই অসুখ হয়। ওই প্রোটিনের প্রভাবে ধীরে ধীরে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে শরীরের বিভিন্ন কলাকোষ।
১৯৯৯ সালে নওয়াজ শরিফ সরকারের বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করেন পাক সেনার তৎকালীন প্রধান মুশারফ। ২০০৮ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কার্যকলাপ ও বেআইনিভাবে জরুরি অবস্থা লাগু করা নিয়ে ২০১৩ সালে মুশারফের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তৎকালীন নওয়াজ শরিফ সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়। শুনানি শেষে ২০১৪ সালের মার্চ মাসে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও পরে সেই সাজা মাফ করে দেওয়া হয়। তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন ও অন্যান্য আইনি জটিলতায় সাজা ঘোষণা ক্রমে পিছিয়ে যায়। এহেন পরিস্থিতিতে ২০১৬ সালে দেশ ছাড়েন প্রাক্তন পাক সেনাপ্রধান। এবার জীবনসায়াহ্নে কি দেশে ফিরবেন মুশারফ? আপাতত সেই উত্তরই খুঁজছে ওয়াকিবহাল মহল।