Advertisement
রাজধানীর ধাক্কায় ৮ হাতির মৃত্যুর জের, জলদাপাড়ায় রেল লাইনে নজরদারি বনদপ্তরের, বসছে ক্যামেরাও
শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত প্রায় ১২৬ কিলোমিটার রেল পথের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে বনাঞ্চল।
অসমে রাজধানী এক্সপ্রেসের ধাক্কায় আট হাতির মৃত্যুর জের! সতর্ক হল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ। ঘন কুয়াশায় রেল লাইনে নজরদারি শুরু করল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ। রেল লাইনের কোন এলাকা বুনো জন্তুর করিডর তা খুঁজে বের করছে বনদপ্তর। শুধু তাই নয়, বিপদ এড়াতে সেই সমস্ত এলাকায় অত্যাধুনিক ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষের।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডি এফ ও পারভীন কাশোয়ান বলেন, “এই সময় ঘন কুয়াশা হচ্ছে। সেই কারণে রেল লাইনে বুনো জন্তুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু তাই নয় আমরা চিহ্নিত এলাকাগুলোতে অত্যাধুনিক ক্যামেরা বসাবো। সেই এলাকায় লাইনে কোন বুনো জন্তু উঠলেই তার লাইভ ফুটেজ আমাদের কন্ট্রোল রুমে আসবে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রেলকেও সতর্ক করা হবে।'' এর ফলে অসমের মতো ঘটনা এড়ানো সম্ভব বলে মনে করছেন বন আধিকারিকরা।
শনিবার রাত ২ টা ১৪ মিনিট নাগাদ অসমের হোজাই জেলার সাইরাং নিউ দিল্লি রাজধানি এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় আট হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই সাতটি হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পরে জখম এক হাতির শাবকের মৃত্য হয়। এর পরেই এই রাজ্যের বিভিন্ন বনাঞ্চল কর্তৃপক্ষ সতর্ক হয়ে উঠেছে।
উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত প্রায় ১২৬ কিলোমিটার রেল পথের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে বনাঞ্চল। এখানকার বক্সা টাইগার রিজার্ভ, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান, গরুমারা জাতীয় উদ্যান, চাপড়ামারি ও মহানন্দা অভয়ারণ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বনাঞ্চল রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই সমস্ত বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে বিস্তীর্ণ রেল পথ গিয়েছে। এই সময় কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা অনেকটাই কমে যায়। ফলে যে কোনও সময় বিপদ ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর সেই কারণে বনাঞ্চলে থাকা রেল পথে কুয়াশার সময় বিশেষ সতর্কতা নেওয়া জরুরি বলে মনে করছে বনদপ্তর। আর তাই এখন থেকেই আগাম ব্যবস্থা নিতে শুরু করল বন আধিকারিকরা। শুরু হয়েছে টহল। যা খবর, খুব শীঘ্রই গুরুত্বপূর্ণ করিডরগুলিতে আধুনিক ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হবে।
এই প্রসঙ্গে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডি আর এম দেবেন্দ্র সিং বলেন, “আমরাও রেল লাইনে বুনো জন্তুর বিষয়ে সব সময় সতর্ক থাকি। ট্রেন চালকদের তৎপরতায় অনেক সময় অনেক বুনো হাতি রক্ষা পায়।” তবে এতসবের মাঝেও দৃষ্টান্ত তৈরি করলো জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ। প্রায় সাড়ে পাচশো কিলোমিটার দূরে ট্রেনের ধাক্কায় আট হাতির মৃত্যু থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করলো এই বন দপ্তর।
অন্যদিকে দুর্ঘটনা রুখতে রেলের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর পাশাপাশি রাজ্য বনদপ্তরকে সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রক। হাতির দিনের গতিবিধি মনিটরিং করতে পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে ডিভিশন ফরেস্ট অফিসারদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলার নির্দেশ দিয়েছেন। রেললাইন সংযোগ রয়েছে এরকম রুট, যেখানে হাতির দলের আনাগোনা লেগে থাকে সেই রুটে লোকো পাইলটদের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব।
Published By: Kousik SinhaPosted: 07:27 PM Dec 22, 2025Updated: 07:46 PM Dec 22, 2025
Sangbad Pratidin News App
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
