Advertisement
কোথাও থিম 'কালপ্রিয়া', কোথাও 'কালজয়ী'! শহরের নামী এই ৫ পুজোয় কী চমক?
দুর্গাপুজোর মতোই কালীপুজোতেও থিমের রমরমা।
রাত পোহালেই কালীপুজো। দীপান্বিতা অমাবস্যায় শক্তির আরাধনায় মেতে উঠবে বাংলা। আঁধার সরিয়ে আলোর উৎসবে সেজে উঠেছে তিলোত্তমা। দুর্গাপুজোর মতোই কালীপুজোতেও থিমের রমরমা। একনজরে দেখে নেওয়া যাক শহরের জনপ্রিয় এই পাঁচ পুজো কোন ভাবনায় সেজে উঠেছে।
বেহালা মিলন তীর্থের থিম এবার 'বাহক'। শিল্পী তপন মণ্ডল এবং সৌরভ ঘোষের ভাবনায় এবার সেজে উঠেছে এই পুজো মণ্ডপ। শুধু তাই নয়, মাতৃপ্রতিমাতেও লেগেছে থিমের ছোঁয়া।
পুজো উদ্যোক্তাদের কথায়, মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। এই সমাজে নানা শ্রেণি, নানা পেশার মানুষ রয়েছেন। যাঁরা একে অপরের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু এমন মানুষও রয়েছেন তাঁদের ছাড়া এই সমাজ চলতে পারে না। তার মধ্যে যেমন রয়েছে কৃষক, রাজমিস্ত্রি, দর্জি, কুমোর, মুচি, মেথর। পুজো উদ্যোক্তাদের কথা অনুযায়ী, অনেক সময় এই সমস্ত মানুষকে নিম্ন শ্রেণির বলে অবজ্ঞা করা হয়। পরিশ্রমের সঠিক মূল্য এবং সম্মান দেওয়া হয় না। সেকথা মাথায় রেখেই এবারের ভাবনা বেহালা মিলন তীর্থের। উদ্য়োক্তারা বলছেন, ''যাঁদের ছাড়া আমরা চলতে পারব না, তাঁদের সম্মান জানাতেই এই নিবেদন।''
শহরের বড় ক্লাবগুলির অন্যতম ত্রিভুবন ক্লাব। ২০২৫ সালে এই ক্লাবের ভাবনা 'সহাবস্থান'। শিল্পী সুমিত বিশ্বাসের ভাবনায় এই ক্লাবের পুজো মণ্ডপ সেজে উঠেছে।
প্রচলিত কৃষ্ণকালীর গল্পগাথাকে মাথায় রেখে সেজে উঠেছে এই ক্লাবের মণ্ডপ। উদ্যোক্তাদের কথায়, একটা সময় ঠাকুমা পুজো করতেন ফুল, জল, বাতাসা, নৈবেদ্য সাজিয়ে। ঘরের আনাচ কানাচ, পুরানো আসবাব-পত্র ও ঝুলের মধ্যে মিশে যেত ধূপ আর কর্পূরের গন্ধ। একটা অন্যরকম ভালো লাগা ছিল। কিন্তু আজ তা বদলে গিয়েছে বলে মনে করছেন পুজো উদ্যোক্তারা। তাঁদের কথায়, কৃষ্ণকালীর গল্প অন্যভাবে আসে। যে আবির্ভাবে দেবী শাক্ত এবং বৈষ্ণব ধারার সংমিশ্রণে আরাধ্যা হন। এখানে দেবী কৃষ্ণকলি হিসাবে ধরা দিয়েছেন। একেবারে অন্য রূপ।
শ্রীকলোনি সমাজ সংঘের এবারের ভাবনা 'কালজয়ী'। শিল্পী তাপস দত্তের ভাবনায় তৈরি হয়েছে এই পুজো মণ্ডপ। শুধু মণ্ডপ সজ্জা নয়, মায়ের মূর্তিতেও রয়েছে থিমের ছোঁয়া। যা পরিবেশকে আরও মোহময়ী করে তুলেছে।
শিল্পী তাপস দত্তের কথায়, যা চিরন্তন যুগান্তকারী বা অনন্তকাল ধরে স্থায়ী এবং কালের গণ্ডি পেরিয়েও যা প্রাসঙ্গিক সেই হল 'কালজয়ী'। তাঁর কথায়, শিশুর মতো পুরনো আর কিছুই নেই। প্রাপ্তবয়স্করা সময়, স্থান এবং সংস্কৃতির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, কিন্তু শিশু গত লক্ষ লক্ষ বছর ধরে একই রয়ে গিয়েছে। যা চিরন্তন এবং অপরিবর্তনীয়। একইভাবে ঈশ্বরও আমাদের জীবনে আজও প্রাসঙ্গিক। তাই 'শিশু মন' এবং 'মা কালী' ই যেন 'কালজয়ী' আর সেটাই মণ্ডপ সজ্জায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বলে মন্তব্য শিল্পী তাপস দত্তের।
পুজো উদ্যোক্তারা বলছেন, ক্ষুদিরাম বসু আঠারো বছরের এক তরুণ, যিনি স্বাধীনতার স্বপ্নকে রক্তদানে রাঙিয়ে তুলেছিলেন। তাঁর হাসিমাখা মুখ আর আত্মত্যাগ আজও সাহস জোগায়। সেই ভাবনা থেকেই তৈরি এই পুজো মণ্ডপ। তাঁরা বলছেন, এই কালীপুজোর শিল্প ভাবনায় ধরা পড়েছে সেই অদম্য পরাক্রমের প্রতীক। সেখানে শিকল ভাঙার শব্দ, আগুনের দীপ্তি আর তরুণ মুখের স্মৃতি মিলেমিশে ওঠে। তাই 'পরাক্রম' কেবল ইতিহাস নয়, আজকের আহ্বান, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর শক্তি বলে মনে করেন পুজো উদ্যোক্তারা।
Published By: Kousik SinhaPosted: 09:58 PM Oct 19, 2025Updated: 12:57 PM Oct 20, 2025
Sangbad Pratidin News App
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
