Advertisement
চেতলা অগ্রণীতে মাতৃপ্রতিমায় চক্ষুদান মমতার! পুজোর মঞ্চ থেকেই বাংলার অস্মিতা রক্ষার বার্তা
আলোর রোশনাইয়ে সেজে উঠেছে শহর।
শারদ জাগ্রত দ্বারে! আলোর রোশনাইয়ে সেজে উঠেছে শহর। আজ মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসান, দেবীপক্ষের সূচনা। আর সেই পুণ্যতিথিতে মায়ের চোখ আঁকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চেতলা অগ্রণী ক্লাবের পুজো মণ্ডপের দ্বারোদ্ঘাটনের পাশাপাশি সেখানকার মায়ের চক্ষুদানও করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর তুলির টানে মৃন্ময়ী মা হয়ে উঠলেন চিন্ময়ী! এদিন শহরের একাধিক পুজো মণ্ডপের উদ্বোধনও করেন তিনি। সেই মঞ্চ থেকেই নাম না করে একদিকে জিএসটি নিয়ে খোঁচা দেন, অন্যদিকে ফের একবার বাংলা এবং বাঙালির অস্মিতা রক্ষা করার বার্তা দেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
প্রথমেই এদিন সেলিমপুর পল্লি'র পুজো উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর বাবুবাগান, বান্ধব সম্মিলনী, যোধপুর পার্ক ৯৫ পল্লি সহ শহরের একাধিক পুজোর উদ্বোধন করেন। পাশাপাশি ভারচুয়াল মাধ্যমে জেলার বহু পুজোরও উদ্বোধন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন যোধপুর পার্ক ৯৫ পল্লীর পুজো উদ্বোধন করে বাংলাভাষীদের উপর একের পর আক্রমণ নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''বাংলায় আমি সব মানুষকে সম্মান, শ্রদ্ধা করি। বাংলা ভাষায় কথা বললে অত্যাচার করে তোমাদের নেতারা।'' তাঁর কথায়, 'বাংলায় হিন্দিভাষীরাও থাকে। তাঁদের উপর তো অত্যাচারের ঘটনা ঘটে না। সব ভাষাকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু আমার মাতৃভাষাকে অসম্মান করার অধিকার কারও নেই।'
এই প্রসঙ্গে এদিন নাম না করে বিজেপিকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ''আমরা বাংলা ভাষায় কথা বললে, তুমি কেন বলবে বেআইনি? সব কিছু তোমাদের আইনি, বাংলা বেআইনি। এটা হয় না।'' তাঁর কথায়, ''আমরা সর্দার বল্লভপাই প্যাটেলকে সম্মান করি, রাজেন্দ্র প্রসাদকে সম্মান করি, গান্ধিজীকে, নেতাজিকে, আম্বেদকরকে সম্মান করি, বিরষা মুন্ডাকে সম্মান করি''। কিন্তু কেন রবীন্দ্রনাথ, নেতাজি, নজরুলকে সম্মান করা হবে না? বিজেপিকে নিশানা করে একথা বলেন মমতা।
বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে একাধিক পরিযায়ী শ্রমিক আক্রান্ত হচ্ছে বলেও অভিযোগ শাসকদল তৃণমূলের। এমনকী বাংলায় কথা বললে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এই বিষয়েও এদিন সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ''আমাদের শ্রমিকদের কেন বলবে, বাংলায় কথা বললেই সে বাংলাদেশি। পুশব্যাক করে দাও। পুশব্যাক তো অনেককেই করা যায়। আমরা পুশব্যাক করতে শিখিনি। আমরা আশ্রয় দিতে শিখেছি। সবাই দেশের নাগরিক।'' তাঁর কথায়, ''আমাদের সংস্কৃতি এবং ভারতবর্ষের সংস্কৃতি আমরা রক্ষা করব, এটা যেমন আমাদের প্রতিজ্ঞা। বাংলার মাকে কেউ অসম্মান করলে আর আমাদের ভাষা কাড়তে গেলেও কখনই বাংলা ভাষার অস্মিতাকে নষ্ট করতে দেব না।''
এদিন জিএসটি নিয়েও নাম না করে বার্তা দেন প্রশাসনিক প্রধান। তিনি বলেন, ‘জিএসটি-র কৃতিত্ব আসলে রাজ্যের। ভাষণ দেওয়া ছাড়া কেন্দ্রের কোনও কৃতিত্ব বা অবদান নেই।’ শুধু তাই নয়, বিমায় জিএসটি তুলে নেওয়া নিয়ে তিনিই যে প্রথম কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছিলেন, তা আরও একবার মনে করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ''এই কৃতিত্ব রাজ্যের।''
অন্যদিকে এদিন একাধিক পুজো উদ্বোধনের পাশাপাশি মহালয়ার দিনেই ‘জাগো বাংলা’ উৎসব সংখ্যার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেখানে অভিষেককে স্নেহের স্পর্শে মুখ্যমন্ত্রীকে আদর করতে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে মাইক হাতে জাগো বাংলা গানে গলা মেলাতেও দেখা যায় প্রশাসনিক প্রধানকে।
Published By: Kousik SinhaPosted: 08:24 PM Sep 21, 2025Updated: 08:27 PM Sep 21, 2025
Sangbad Pratidin News App
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
