Advertisement
গোপন হারেমে অভিসার, সাফাইকর্মী থেকে বারবণিতা বাদ যাননি কেউ! প্রকাশ্যে পুতিনের যৌনকেচ্ছা
রাতারাতি বিপুল ধনী হয়ে ওঠেন পুতিনের শয্যাসঙ্গিনীরা।
সময়টা ২০২১ সালের মাঝামাঝি। রুশ সাংবাদিক রোমান বাদনানির ঘুম ভাঙল পুলিশের ডাকে। দরজা খুলতেই রুশ গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির ৬ থেকে ৮ জন সাদা পোশাকের কর্তা বাদনানির ঘরে ঢুকে শুরু করল তল্লাশি। সাংবাদিককে নিয়ে যাওয়া হল নিকটবর্তী থানায়। সেখানে ঘণ্টা চারেক জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রশাসন জানাল, বাদনানি নাকি বিরাট আর্থিক কেলেঙ্কারিতে লিপ্ত এবং দেশে সামরিক অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র করছেন। যদিও বাস্তবে তাঁর 'অপরাধ' ছিল এক যুবতীর সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা। যাঁকে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের 'অবৈধ কন্যা' বলে মনে করতেন।
৪৮ বছর বয়সি বাদনানির বর্তমান ঠিকানা আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া। সেখানে স্ত্রী ও কন্যার সঙ্গে বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি 'ডেইলি মেল'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই সাংবাদিক বলেন, পুতিনের ব্যক্তিগত জীবন রাশিয়ার সবচেয়ে নিষিদ্ধ বিষয়গুলির মধ্যে একটি। রাশিয়ায় সাংবাদিকদের মধ্যে একটি কথা প্রচলিত আছে। 'পুতিনের ব্যক্তিগত জীবনের ধার মাড়ানো যাবে না।' এহেন বাদনানি ও তাঁর সহকর্মী ৩৭ বছর বয়সি নিখাইল রুবিন 'The Tsar Himself, How Vladimir Putin Deceived Us All' নামে একটি বই প্রকাশ করেছেন। সেই বইয়ের পাতায় পাতায় তুলে ধরা হয়েছে পুতিনের নারীসঙ্গ ও বিস্তর কেচ্ছা।
পুতিন বিশ্বের সামনে নিজেকে ঐতিহ্যবাহী পারিবারিক মূল্যবোধের সমর্থক হিসেবে তুলে ধরেন। তবে এই বইয়ে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, পুতিনের রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে তিনি স্ট্রিপার, পতিতা এবং ক্ষমতার মোহে প্রলুব্ধ মহিলাদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন।
পুতিনের কর্মজীবনের শুরু রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থা কেজিবি থেকে। ৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সরাসরি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং তিন বছরের মধ্যে সেন্ট পিটার্সবার্গের ডেপুটি মেয়র হন। ততদিনে তিনি লুডমিলারের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ এবং তাদের দুটি কন্যা রয়েছে।
বইয়ে বলা হচ্ছে, দাম্পত্য জীবনে বাইরে পুতিনের অন্ধকার জীবন নেহাত কম নয়। সেই সময় সেন্ট পিটার্সবার্গের একটি ট্রিপ ক্লাব লুনাতে নিয়মিত যেতেন পুতিন। ক্লাবের দ্বিতীয় তলায় পুতিনের জন্য ছিল একটি বিশেষ কক্ষ। নর্তকীদের সঙ্গে সময় কাটাতেন তিনি। পুতিনের তৎকালীন দেহরক্ষী রোমান সেপভের ক্লাবটি চালাতেন। দাবি করা হয়, দ্বিতীয়তলার ওই কক্ষ ছিল পুতিনের গোপন হারেম। উল্লেখ্য, মুসলিমদের মধ্যে এই হারেম ঘরের প্রচলন রয়েছে। ক্ষতাশালী মুসলিমরা স্ত্রী, একাধিক মহিলা ও দাসীদের রাখতেন। সেখানে অন্য পুরুষদের প্রবেশ ছিল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
বইয়ে আরও দাবি করা হয়েছে, পুতিনের প্রথম বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক স্ট্রিপারের সঙ্গে নয়, বরং এক সুন্দরী সাফাইকর্মীর সঙ্গে। যার নাম স্বেতলানা ক্রিভোনোগিখ। ১৯৯৯ সালে এই সম্পর্কের সূত্রপাত। যখন পুতিন ছিলেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে অনেকখানি এগিয়ে। এই সম্পর্ক থেকেই ২০০৩ সালে ক্রিভোনোগিখের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। যাঁর নাম এলিজাভেটা (এখন লুইজ রোজোভা)। এই তরুণীর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন সাংবাদিক বাদানিন। পুতিনের চেহারার সঙ্গে তরুণীর প্রচুর মিল এবং অতীতে পুতিনের সঙ্গে তাঁর মায়ের সম্পর্কের প্রেক্ষিতে সন্দেহ প্রবল আকার ধারণ করে। এই প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসার পর অবশ্য ক্রিমলিনের তরফে তা খারিজ করা হয়। এলিজাভেটার জন্মের পর ২০০৩ সালে এক বিশাল এলাকায় ২.৯ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছিলেন তার মা স্বেতলানা। একজন সাফাইকর্মী হলেও ২০২১ সালে তাঁর সম্পদের পরিমাণ দেখা যায় ৭৮ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি।
২০০৪ সালে পুতিনের মন যায় ২১ বছর বয়সি আলিনা কাবায়েভার দিকে। এথেন্স অলিম্পিকে জিমন্যাস্টিকে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন এই তরুণী। অলিম্পিক জয়ের পর ম্যাক্সিম ম্যাগাজিনের জন্য একটি আবেদনময়ী ছবি প্রকাশিত হয় তাঁর। যেখানে দেখা যায় নগ্ন কাবায়েভা একটি পশমে নিজের গোপনাঙ্গ আড়াল করে রেখেছেন। যা রীতিমত সাড়া ফেলে দেয়। পুতিনের সঙ্গে কাবায়েভার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর কোচ ইরিনা ভিনার। ২০০৫ সালে কাবায়েভাকে 'ফরমেরি টু দ্য ফাদারল্যান্ড' পুরস্কার দেওয়া হয় ক্রেমলিনের তরফে। মনে করা হয় পুতিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের শুরু ২০০৬ সাল নাগাদ।
২০০৮ সালে এক চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশ্যে আসে। যেখানে দাবি করা হয় পুতিন এবং কাবায়েভা বিয়ে করতে চলেছেন। ইতালিতে সাংবাদিকদের তরফে পুতিনকে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। কড়া সুরে বলেন, "যারা মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে নাক গলায় আমি সেই সব লোকেদের ঘৃণা করি।" পরে দেখা যায় মস্কোর যে সংবাদপত্র এই খবর প্রকাশ করেছিল সেটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
রাশিয়ার 'অঘোষিত ফার্স্ট লেডি' হিসেবে পরিচিত এই কাবায়েভার দুই ছেলে ইভান (১০) এবং ভ্লাদিমির (৬)। ২০১৪ সালে তাঁকে জাতীয় সংবাদ সংস্থার প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তাঁর বেতন ছিল ৭.৭ মিলিয়ন পাউন্ড। একই সঙ্গে তিনি ব্যাংক রসিয়ার একজন প্রধান শেয়ার হোল্ডার। জানা যায়, পুতিনের সঙ্গে সম্পর্ক শুরুর এক বছর পর ২০০৬ সালে কাবায়েভার প্রাক্তন প্রেমিক গায়ক মুরাদ নাসিরভ মস্কোর একটি বহুতলের পাঁচতলা থেকে পড়ে মারা যান।
Published By: Amit Kumar DasPosted: 04:46 PM Oct 19, 2025Updated: 02:35 AM Oct 20, 2025
Sangbad Pratidin News App
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
