সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হনুমা বিহারী (Hanuma Vihari) ও অন্ধ্রপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার (Andhra Cricket Association) মধ্যে বিতর্ক এবার নতুন মোড় নিল। ১৬টি টেস্ট খেলা তারকা ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি বসিয়ে দিল তাঁরই রাজ্য সংস্থার কর্তারা। রনজি ট্রফির (Ranji Trophy 2023-24) মরশুম শেষ হতেই হনুমা সোশাল মিডিয়াতে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি আর নিজের রাজ্য দলের হয়ে খেলবেন না। এর পরেই হনুমার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটির বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই ইস্যু নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে অন্ধ্র ক্রিকেট সংস্থা। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘পুরো ব্যাপারটা আমাদের নজরে এসেছে। মিস্টার হনুমা বাংলার বিরুদ্ধে ম্যাচ চলাকালীন স্কোয়াডে থাকা এক ক্রিকেটারের উপর নাকি গলা চড়িয়েছিলেন। সবার সামনেই তিনি সেই জুনিয়র ক্রিকেটারকে গালিগালাজ করেন। এতে দলের সংহতি এবং ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। সেই ক্রিকেটার হনুমার বিরুদ্ধে সরকারি অভিযোগ দায়ের করেছে। সেই জন্য আমরা তদন্ত কমিটি গড়লাম।’ যদিও রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার গড়া এই তদন্ত কমিটিকে একেবারেই পাত্তা দিতে রাজি নন টিম ইন্ডিয়ার ক্রিকেটার। সেটা তিনি সোশাল মিডিয়াতে লিখেও দিয়েছেন। হনুমার পালটা বার্তা, ‘তোমরা চেষ্টা করে যাও।’
শুধু তাই নয়, কর্তাদের কটাক্ষ করে তিনি নিজের X হ্যান্ডলে আরও একটি টুইট করেছেন। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘এর পর কী হবে? ওরা দলের সাপোর্ট স্টাফদের ডেকেছে। ওদের সঙ্গে কর্তারা আলোচনায় বসবে। সবাই সফট টার্গেটকে চাপ দিতে ভালোবাসে। এক্ষেত্রেও তাই বলে মনে হচ্ছে। নিজেদের চাকরি বাঁচানোর জন্য সাপোর্ট স্টাফরা আমার বিরুদ্ধে কথা বলবে।’
মধ্যপ্রদেশের কাছে হারের খেলা শেষ হতেই বিস্ফোরণ ঘটান হনুমা। সোশাল মিডিয়ায় হনুমা লিখে দেন, ‘সবচেয়ে দুঃখের হল, সংস্থা মনে করে ওরা যা বলবে, প্লেয়ার মানতে বাধ্য। কারণ, প্লেয়াররা বেঁচেবর্তে রয়েছে ওদের জন্য। তাই ঠিক করেছি, আর কখনও অন্ধ্রপ্রদেশের হয়ে খেলব না। কারণ, আমার আত্মসম্মান নষ্ট হয়েছে এখানে। আমি আমার টিমকে ভালোবাসি। প্রতি মরশুমে যে ভাবে আমরা উন্নতি করছিলাম, দেখে দারুণ লাগত। কিন্তু আমাদের ক্রিকেট সংস্থা চায় না আমাদের রাজ্যের ক্রিকেটের উন্নতি হোক।’ এর পর যোগ করেন, ‘বাংলার বিরুদ্ধে আমি প্রথম ম্যাচে অধিনায়ক ছিলাম। সেই ম্যাচে দলের সতেরো নম্বর প্লেয়ারের উদ্দেশে চেঁচিয়ে ফেলি। সে গিয়ে তার বাবাকে বলে। তার বাবা আমাদের রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা কর্তাদের বলল, আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। গত বারের রনজি ট্রফি ফাইনালিস্ট বাংলার দেওয়া স্কোর আমরা তাড়া করে দিলাম। কিন্তু তার পরেও আমাকে নেতৃত্ব ছাড়তে বলা হল। অথচ আমার কোনও দোষ ছিল না। আমি ব্যক্তিগত ভাবে সেই প্লেয়ারকে আক্রমণ করিনি।’
হনুমার বিস্ফোরণের পরই তাঁর বর্ণিত সেই ‘প্লেয়ার’ অর্থাৎ কেএন প্রুধবি রাজ পালটা দেন। লেখেন, ‘আমিই সেই ক্রিকেটার, যাকে আপনারা সবাই কমেন্ট বক্সে খুঁজছেন। আপনারা যা যা শুনলেন, পুরোটাই মিথ্যে। আমার কাছে আত্মসম্মান অনেক বড়। নোংরা ভাষায় ব্যক্তিগত আক্রমণ কোনও ভাবে মেনে নেওয়া যায় না। টিমের সবাই জানে সে দিন কী হয়েছিল। মহামান্য ওই ক্রিকেটার আমাকে সে দিন বলেছিল, তোর জায়গা এটাই। এর চেয়ে বেশি তোর কিছু হবে না! সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা অন্যত্র গিয়ে করা ভাল!’
অবশ্য হনুমাও চুপ থাকেননি। তিনিও পালটা দিয়েছেন। নিজের বিবৃতির একটা ছবি পোস্ট করেন। যার তলায় গোটা টিমের ক্রিকেটারদের সই করা। সঙ্গে লিখে দেন, ‘কী ঘটেছে সেদিন, পুরো টিম জানে।’ ফলে সব মিলিয়ে সরগরম অন্ধ্রপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থা।