স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে আরও চাপে ভারতের নির্বাচন কমিশন। বিরোধী দলগুলির অভিযোগেই আর থেমে থাকল না তথ্য সংক্রান্ত বিতর্ক। এবার এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) দায়ের হল মামলা। প্রথম দু’ দফার তথ্যের অমিল, দেরিতে তথ্য প্রকাশের উল্লেখ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হল অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস। আবেদন করা হয়েছে, নির্বাচন শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য প্রকাশের নির্দেশ দিক আদালত।
প্রথম দু’ দফার নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরও এই দু’ দফায় কত শতাংশ ভোটদান হয়েছে, কোন বুথে কত পোলিং হয়েছে এই ধরনের তথ্য প্রকাশ করেনি কমিশন। যা প্রকাশ্যে আসে ৩০ এপ্রিল। তারপর থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। কমিশন প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায় দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬৬.৭১ শতাংশ। অথচ নির্বাচনের দিন বলা হয়েছিল ভোটদান হয়েছে ৬০.৯৬ শতাংশ। কীভাবে ৫.৭৫ শতাংশ ভোট বেড়ে গেল সেই প্রশ্ন তোলা শুরু করে বিরোধীরা। একইসঙ্গে জানতে চাওয়া হয় কেন প্রথম দফার ১১ ও দ্বিতীয় দফার চারদিন পর প্রকাশ হল তথ্য?
[আরও পড়ুন: জেল থেকে বেরিয়েই পুরোদমে প্রচার, আজ বজরংবলীর দরবারে কেজরিওয়াল]
এই প্রসঙ্গে নিজেদের বক্তব্য রাখতে কমিশনের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে চিঠিও লেখা হয় ‘ইন্ডিয়া’র (INDIA) তরফে। এই আবহেই কংগ্রেস (Congress) সভাপতিকে কড়া চিঠি দিল কমিশন। চিঠিতে বলা হয়েছে, যে অভিযোগ মল্লিকার্জুন খাড়গে করেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন পক্ষপাতদুষ্ট ও অযৌক্তিক। ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, বর্তমানে নির্বাচন চলছে। এই সময় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনায় বিভ্রান্তি ছড়াতে ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে ভোটদানের তথ্য সংক্রান্ত অভিযোগের নকশা তৈরি করা হয়েছে। ভোটের মুখে এমন বিবৃতি ভোটারদের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে অভিযোগ করেছে কমিশন (Election Commission)। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বাকস্বাধীনতাকে আমরা সম্মান করি। রাজনৈতিক দলগুলি একে অপরের সঙ্গে চিঠি চালাচালি করবে এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। তবে যে জিনিস নির্বাচন পরিচালনার উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে তেমন কাজ করার বিষয়ে সংযত থাকা উচিত। ফলাফল প্রকাশের আগে পর্যন্ত এমন ধরনের কাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া কমিশনের দায়িত্ব।’
[আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে অমৃতা সিনহার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা খারিজ]
রাজনৈতিক চাপানউতোরের মাঝেই জল গড়াল সর্বোচ্চ আদালতে। যেখানে এডিআরের (ADR) তরফে বলা হল, নির্বাচন শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য প্রকাশ করতে হবে কমিশনকে। তা হতে হবে বুথভিত্তিক। কমিশনের তরফে এই নিয়ে মন্তব্য করা না হলেও তাদের বক্তব্য, ২০১৯ সালের পর থেকে তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে নতুন কিছু নিয়মাবলী মেনে চলা হচ্ছে। যার জেরে নির্বাচনের পরপর প্রকাশ করা তথ্যের থেকে কিছুটা বেড়ে যাচ্ছে আসল তথ্য। এই নিয়ে কোনও বিভ্রান্তি নেই বলেও দাবি করা হয়েছে।