সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোটা আন্দোলন থেকে হাসিনা হঠাও আন্দোলন। অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। গণঅভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবনের দখল নিয়েছে উন্মত্ত জনতা। দেশ ছেড়ে ভারতে এসেছেন তিনি। এই অবস্থায় বাংলাদেশ ইস্যুতে জরুরি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রিন্সিপাল সচিব পিকে মিশ্র, ‘র’-এর প্রধান রবি সিন্হা এবং গোয়েন্দা বিভাগের (আইবি)-র ডিরেক্টর তপন ডেকা। অন্য দিকে দিল্লিতে হাসিনা পৌঁছতেই সংসদে গিয়ে বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
রবিবার থেকেই কোটা আন্দোলন কার্যত হাসিনা হঠাও অভিযানে পরিণত হয়। রাজধানী ঢাকা-সহ বিভিন্ন জেলায় আন্দোলনকারী, বিএনপি, জামাত, পুলিশ এবং আওয়ামি লিগের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে মৃতের তিনশো ছোঁয়। শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন হাসিনা। দেশ ছাড়েন তিনি। প্রাথমিক ভাবে 'অরাজক' দেশে শান্তি স্থাপনে দায়িত্ব নিয়েছে সেনা। সেনার সদর দপ্তরে বৈঠকে বিএনপি, জামাত নেতাদের উপস্থিতিতে অন্তর্বর্তি সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান। প্রশ্ন উঠছে, সেখানে আওয়ামি লিগের প্রতিনিধি ছিল না কেন? তাহলে কি পাকিস্তানপন্থীদের দখলে চলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের দেশ?
সূত্রের খবর, বাংলাদেশ বৈঠক শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত হাসিনার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেননি মোদি। তবে দিল্লি যে বিএনপি, জামাতের মতো ভারতবিরোধী শক্তিগুলিকে নিয়ে ভাবিত তা বলা বাহুল্য। সাউথ ব্লকের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পরেই ভারতের অবস্থান স্পষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে। হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশ এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা দিল্লির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও সংসদে এসে দেখা করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে। তবে তাঁদের মধ্যে কী কথা হয়েছে জানা যায়নি। উল্লেখ্য, ১৯৭১ এর বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বড় ভূমিকা ছিলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার তথা ভারতীয় সেনার।
প্রসঙ্গত, পাঁচ দশক আগে শেখ মুজিবর রহমানের হত্যার পর নয়া দিল্লির পান্দারা রোডে এসে উঠেছিলেন তরুণী শেখ হাসিনা। সঙ্গে ছিলেন স্বামী এম ওয়াজেদ ও দুই সন্তান সজীব ও সাইমা পুতুল। ইন্দিরাই তাঁদের নিরাপত্তা দিয়েছিলেন। অর্ধশতক পরে অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ ছেড়ে মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা ফের পালিয়ে এলেন সেই দিল্লিতে।