বোরিয়া মজুমদার: ৩ জুলাই ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর সাপ্তাহিক সাহিত্যপত্র ‘রোববার’ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) জীবনের হাফ সেঞ্চুরি নিয়ে বড়সড় একটা কাজ করে ফেলেছে। নানান নাম, নানান চিন্তা, নানান শংসার প্রতিফলনে সেই ‘দাদার কীর্তি’ উজ্জ্বল। ফলে, ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর সম্পাদক যখন আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আর কী ‘স্পেশাল’ করা যায়, যাতে পাঠক আরও চমৎকৃত হবে, তখন সত্য়িই বেশ চিন্তায় পড়লাম।
ভাবতে ভাবতে হঠাৎ জাভেদ আখতারের (Javed Akhtar) নামটি মাথায় এল। সৌরভকে নিয়ে জাভেদসাব যদি একটা নতুন কবিতা লেখেন, কেমন হয়? কিন্তু আদৌ কি তা সম্ভব? জাভেদসাব রাজি হবেন কি? আরও হাজারটা প্রশ্ন আমাকে পেড়ে ফেলার আগে ফোনই করে ফেললাম জাভেদসাবকে।
[আরও পড়ুন: ভরা সভায় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি, মৃত্যুর মুখে জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে]
ইংল্যান্ডে তখন সকাল ৫টা ২২। ভাবলাম, এটাই তাঁকে ‘কল’ করার মোক্ষম সময়। আর, জাভেদসাব যেমন, সঙ্গে সঙ্গে ফোনটি ধরলেন। তারপর গোটা ব্যাপারটা বললাম। সব শুনে প্রথমেই তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
–আপ কাঁহা পে হ্যায়? কোথায় আছেন আপনি এখন?
–এই তো বার্মিংহ্যামে।
তাঁর তৎক্ষণাৎ সচকিত লব্জ– আরে, আমিও তো লন্ডনে। উইম্বলডন দেখতে এসেছি!
এই রে! রীতিমতো লজ্জা পেয়ে আমি তো তাঁর কাছে সর্বাগ্রে ক্ষমা চাইলাম। নির্ঘাত সাতসকালে ফোন করে তুলে দিলাম। আসলে, আমি ধরে নিয়েছিলাম তিনি হয়তো ভারতে আছেন। সেই মতো সময় অ্যাডজাস্ট করে ফোন করেছিলাম। কিন্তু জাভেদসাব তো জাভেদসাব-ই। বললেন, আরে নেহি, জাস্ট একটু জেট ল্যাগ ভাই। ফলে, আগে-ভাগেই সাতসকালে উঠে পড়েছি। তারপর আমাকে সেন্ট জেমসে তাজ হোটেলে দেখা করার জন্য আসতে বললেন।
[আরও পড়ুন: জেপি নাড্ডার সঙ্গে কথা, হিমাচল ভোটের আগে কংগ্রেস ছাড়তে পারেন আনন্দ শর্মাও]
বুঝতেই পারিনি যে, তিনি ততক্ষণে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর জন্য আস্ত একখানা কবিতা লিখে ফেলেছেন। এবং সারা সকাল সেই নিয়েই ঘষামাজা করেছেন কেবলমাত্র আমাদের জন্য। তারপর যখন আমাদের কাছে সেই কবিতা একেবারে জাভেদখচিত স্টাইলে পড়ে শোনালেন, কী যে বলি, অবাক হতেও ভুলে গেলাম। সৌরভের জন্মদিন (Sourav Ganguly Birthday) উপলক্ষে এর চেয়ে বড় উপহার ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর তরফে আর কীই-বা হতে পারত! সেই কারণে, আমরা ঠিক করলাম, তাঁর কবিতাটি পাঠকদের কাছে পেশ করব তো বটেই, এমনকী, সঙ্গে তাঁর লেখা আসল খসড়াটিও থাকবে।
নিশ্চয়ই আপনাদের জানতে ইচ্ছা করছে সৌরভ সম্পর্কে জাভেদসাব কী মনে করেন? তাঁর মতে, সৌরভ বরাবরই ক্ষমতায়নের প্রতীক। অকুতোভয় মানুষ। যখনই প্রয়োজন হয়েছে রুখে ও ঘুরে দাঁড়ানোর, তিনি সদর্পে দাঁড়িয়েছেন তো বটেই। এবং বীরের মতো পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছেন। তাঁর মতো মানুষ আমাদের সমাজে আরও অনেক দরকার। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এই বছরের জন্মদিনটি লন্ডনেই কাটাবেন। উইম্বলডন দেখতে আসেন যদি? তাহলে হয়তো জাভেদসাবের সঙ্গে মোলাকাত-ও হয়ে যেতে পারে। আমাদের পাঠকদের জন্য রইল সেই কবিতা-
হাফ সেঞ্চুরি মার দি ইসনে
জা ভে দ আ খ তা র
দেশ কি শান বাড়ানেওয়ালা
ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ কি খেলোঁ মে
সবসে জাদা একশো তিরাশি কা স্কোর দিখানেওয়ালা
দো হাজার দো মে ভারত কো লর্ডস কা লর্ড বানানেওয়ালা
যিসকে কারণ্ জানে কিতনিবার হামারে দিলোঁ নে খেলি হ্যায়
য্যায়সে খুশিওঁ কি হোলি
হাঁ-আা-আ ওহি সৌরভ গাঙ্গুলি
ইয়ে জো সদা করতা আয়া হ্যায়
ওহি বাত ফিরসে কি হ্যায় ইস্নে
হাফ সেঞ্চুরি মার্ দি ইসনে
জিত্না য্যায়সে ধরম্ হ্যায় ইস্কা
বখ্তসে ভি ইয়ে কব হারেগা
বস্ তুম ইসকো দেখ্তে যাও
এক সেঞ্চুরি ফির মারেগা