অর্ণব আইচ: হরিদেবপুরে পরিত্যক্ত অটো থেকে বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ উদ্ধারের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে দু’জনকে সিসিটিভি ফুটেজে দেখাও গিয়েছিল। তাদের জেরা করেই বাকি দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের রবিবারই তোলা হবে আদালতে। ওই অটোর ভিতর কেন বোমা ও অস্ত্রশস্ত্র মজুত করা হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শনিবার সকালে হরিদেবপুর এলাকার ৪১ পল্লি ক্লাবের সামনে একটি পরিত্যক্ত অটোর মধ্যে থাকা প্লাস্টিকের ব্যাগের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় ১৯টি তাজা বোমা। এছাড়াও একটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং দু’টি কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। প্রথমে স্থানীয়রাই তা দেখতে পান। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হরিদেবপুর থানার পুলিশ। বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র এবং কার্তুজ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, যে জায়গায় ওই অটোটি রাখা ছিল সেই জায়গাটি একটি আর্থিক সংস্থাকে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। তারা ঋণখেলাপি অটো বাজেয়াপ্ত করে সেখানে রাখত। সম্প্রতি তিনটি অটো বাজেয়াপ্ত করা হয়। তারই একটি থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়। আরও জানা গিয়েছে, পরিত্যক্ত ওই অটোটি হরিদেবপুর রুটের নয়। তার পিছনে লেখা বিজয়গড় থেকে চক্রবেড়িয়া রুটের। অটোর মালিক শৈলেন ঘোষ।
[আরও পড়ুন: দেশে বেড়েই চলেছে করোনার অ্যাকটিভ কেস, বুস্টার ডোজে জোর দেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের]
তবে সেখানে ওই তাজা বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র কীভাবে এল, তার সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ। কেউ আগে থেকে মজুত করে রেখেছিল কি না বা কোথাও হামলার পরিকল্পনা ছিল কি না, তারও খোঁজ চালানো হচ্ছে হরিদেবপুর থানার পুলিশের তরফে। জানা গিয়েছে, স্থানীয় সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। তাতেই চাঞ্চল্যকর ছবি ধরা পড়েছে। ১৮ এপ্রিল গভীর রাতে একটি বাইকে চেপে দু’জন সেখানে এসেছিল। একটি প্লাস্টিকের প্যাকেটে করে কিছু রাখা হচ্ছে তেমনটাই দেখা যাচ্ছে। গভীর রাতে সবাই ঘুমোচ্ছিলেন তাই এনিয়ে পুলিশের মনে আরও সন্দেহ জাগছে।
এদিকে ঘটনার কথা ভেবে শিউরে উঠছে স্থানীয়রা। অন্যদিকে, এই ঘটনার জেরে রাজনৈতিক তরজা সরগরমে। এ নিয়ে রাজ্যকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। তবে এর পালটা অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণের জবাবে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “দুষ্কৃতীরা সমাজে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ থেকে অস্ত্র আসছে।” ফিরহাদ আরও বলেন, “শুধু কলকাতা থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয় না। খুঁজলে সুকান্তবাবুর বাড়ি থেকেও অস্ত্র পাওয়া যাবে। ওঁরা তো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অনুষ্ঠান করে।”
পুরমন্ত্রীর এই মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে পালটা টুইট করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি লেখেন, “তল্লাশি চালালে আমার বাড়ি থেকে অস্ত্র পাওয়া যাবে বলে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। আমার বাড়িতে তল্লাশিকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে ওঁর বাড়িতেও তল্লাশির অনুমতি দিতে চ্যালেঞ্জ করছি। এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি।”