অর্ণব আইচ ও দেবব্রত মণ্ডল: আইএসএফ ও তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে এখনও উত্তপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। এখনও পর্যন্ত মোট আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি-সহ ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এদিকে, রবিবার সকালে স্থানীয় তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের বাড়ির অদূরে বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় ৩ জন আইএসএফ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে কাশীপুর থানার পুলিশ। পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভাঙড়ে সভা, মিছিলও স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত তৃণমূলের।
শুক্রবার রাত থেকে ভাঙড়ে গুলি চলাকে কেন্দ্র করে অশান্তির সূত্রপাত। শনিবার ধর্মতলায় দলীয় কর্মসূচি ছিল আইএসএফের। অভিযোগ, সেই সময় কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালায় তৃণমূল। তার প্রতিবাদে ধর্মতলায় অবরোধ শুরু করে আইএসএফ। ব্যস্ততম রাস্তায় অবরোধ হঠাতে এগিয়ে আসে পুলিশ। তারপর আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশ কার্যত খণ্ডযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। জখম হন বউবাজার থানার ওসি এবং অ্যাডিশনাল ওসি। তাঁরা ভরতি হাসপাতালে। শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
পুলিশকে মারধর, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট-সহ একাধিক অভিযোগ ওঠে আইএসএফের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগে পুলিশ আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি-সহ মোট ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে ১৩ জনকে হেয়ার স্ট্রিট, ৬ জন নিউ মার্কেট এবং বাকিদের কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তদের রবিবারই ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হবে।
[আরও পড়ুন: সাংগঠনিক বৈঠকে মঞ্চে জায়গাই পেলেন না রাহুল সিনহা! গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কড়া বার্তা বনশলের]
এদিকে, এই অশান্তির পর থেকে তপ্ত ভাঙড়। রবিবার সকালে ভাঙড়ের হাতিশালায় তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের বাড়ির অদূরে চাষের জমি থেকে একটি ব্যাগ এবং একটি বস্তাবোঝাই বোমা উদ্ধার হয়েছে। বম্ব স্কোয়াডে খবর দেওয়া হয়েছে। আরাবুল জানান, চক্রান্ত করে বোমাগুলি তাঁর বাড়ির কাছে চাষের জমিতে রাখা হয়েছিল। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে কাশীপুর থানার পুলিশ। ধৃতরা প্রত্যেকে আইএসএফ কর্মী।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ভাঙড়ের হাতিশালায় সভা এবং মিছিল করার কথা ছিল তৃণমূলের। তবে ভাঙড়ের অশান্তির পর মিছিল এবং সভা আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ এই সিদ্ধান্ত।