ধীমান রায়, কাটোয়া: কেতুগ্রামে নার্সের হাত কেটে নেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও ২। বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার তালগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের। ধৃত আসরফ আলি ও হাবিব শেখ ওই এলাকারই বাসিন্দা। আগেই নির্যাতিতা নার্সের স্বামী শের মহম্মদ শেখকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে জেরা করেই বাকি দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারীরা।
উল্লেখ্য, কেতুগ্রামের (Ketugram) কোজলসা গ্রামে শ্বশুরবাড়ি আক্রান্ত রেণু খাতুন নামে ওই তরুণীর। বাপেরবাড়ি কেতুগ্রামের চিনিসপুর গ্রামে। চিনিসপুর গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল হকের ছোট মেয়ে রেণু। ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে কোজলসা গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ শেখের একমাত্র ছেলে শের মহম্মদ শেখ ওরফে শরিফুলের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। রেণু নিজে নার্সিং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্স পদে চাকরি করছিলেন। ফলে সরকারি চাকরির চেষ্টা করছিলেন। সম্প্রতি সরকারি চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। কয়েকদিন আগেই প্যানেলে নাম ওঠে তাঁর। শুধু চাকরিতে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। সরকারি চাকরি পেলে স্ত্রী হাতছাড়া হয়ে যাবে। এই আশঙ্কার তাঁর ডান হাত কেটে দেয় শরিফুল। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: বাড়িতে নেই, কোথায় গেলেন প্রাইমারি TET দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বাগদার রঞ্জন? বাড়ছে রহস্য]
প্রথম থেকেই রেণু জানান, হাত কাটার সময় তাঁর স্বামীর সঙ্গে আরও দু’জন ছিল। তারাও স্বামীরই বন্ধু। নাম না জানলেও, মুখ দেখলে চিনতে পারবেন বলেই জানিয়েছিলেন তিনি। রেণুর স্বামীর বয়ান অনুযায়ী পুলিশ আসরফ আলি ও হাবিব শেখকে গ্রেপ্তার করে। জানা গিয়েছে, মাসতুতো ভাইয়ের মাধ্যমে ওই দুই যুবকের সঙ্গে আলাপ হয় রেণুর স্বামীর। স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তির কথা নতুন বন্ধুদের জানায় সে। নার্সের চাকরিতে যোগ দিলে স্ত্রী হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে বলেই শরিফুলকে জানায় ওই দুই যুবক। এরপরই তিনজন মিলে রেণুর হাত কেটে নেয়। স্রেফ বন্ধুত্বের খাতিরে ওই দুই যুবক শরিফুলকে সাহায্য করে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এদিকে, উত্তরবঙ্গ সফর সেরে ফিরেই কেতুগ্রামের নার্সের হাত কেটে নেওয়ার ঘটনায় মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আহত নার্সের চিকিৎসার ভার রাজ্যের, এমনটাই ঘোষণা করলেন তিনি। পাশাপাশি, ওই তরুণীর চাকরিতে যাতে কোনওরকম সমস্যা না হয় সেদিকটাও দেখা হবে বলে আশ্বাস মমতার।