সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ফাঁস হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ঘিরে তোলপাড় পুরুলিয়ার রাজনীতি। তৃণমূলের দাবি, রাজ্য সরকারকে বদনাম করতে ঘৃণ্য চক্রান্ত করছে বিজেপি। সরকারের বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র করার দায়ে এক সাংসদ, দুই বিধায়ক-সহ মোট ছয় বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হল রঘুনাথপুর থানায়। অভিযোগ করলেন তৃণমূল নেতা। ‘ফেক’ হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ভাইরাল করে বিজেপিকে বদনাম করার অভিযোগ তুলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে পালটা পুলিশে গেল বিজেপি নেতৃত্ব। এই ভাইরাল চ্যাটের কিনারা না হলে সাংসদ, বিধায়করা রাস্তায় ধরনায় বসবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, পুরুলিয়ায় বিজেপির ‘কোর’ কমিটির একটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায় একটি গ্রুপে বলা হচ্ছে, “ঘর পাবে বলে প্রশাসনের ত্রাণ শিবির বা স্কুলগুলিতে বেশি করে লোক ঢুকিয়ে দাও। ফলে করোনা হবে। সরকার ফাঁসবে।” বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর নামে দেওয়া ‘নির্দেশে’ সম্মতি দিতে দেখা গিয়েছে পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ তথা দলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর নামের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টকে। তবে ভাইরাল হওয়া এই স্ক্রিন শটের সত্যতা যাচাই করেনি ‘সংবাদ প্রতিদিন’।
[আরও পড়ুন: করোনা আবহে কবে হবে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক? দিনক্ষণ ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী‘]
বিজেপির সমালোচনা করে এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। এর পরই এক সাংসদ, দুই বিধায়ক-সহ মোট ছয় বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেন পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা রঘুনাথপুরের তৃণমূল প্রার্থী হাজারি বাউরি। এ প্রসঙ্গে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “ছিঃ বিজেপি ছিঃ। পুলিশকে এই চ্যাট পাঠিয়ে তদন্ত করে দেখতে বলেছি। তদন্ত করে সত্য প্রমাণিত হলে দোষীদের শাস্তি হোক। আমি নিশ্চিত এটা সত্য। মানুষ বুঝে গেছে বিজেপি এরকমই করে।”
তৃণমূলের অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, পুরুলিয়ার জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী-সহ অন্যান্য নেতারা পুলিশ সুপারের অফিসে গিয়ে অভিযোগ জানান। ফেক পোস্ট ভাইরাল করার অভিযোগে পুরুলিয়া শহর তৃণমূল সভাপতি গৌরব সিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। বিজেপি নেতৃত্বের কথায়, বিজেপির কোর কমিটি বলে কোনও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ নেই। এক গ্রুপ তৈরি করে কেউ কেউ ঢুকে এসব করেছে। সাংসদ জানিয়েছেন, “কেউ কেউ কারসাজি করেছে। কোনও গ্রুপে ভিডিও কলের অপশন থাকে না। এটাতে ছিল। পুলিশকে বিষয়টা তদন্ত করে দেখতে বলেছি। জঘন্য রাজনীতি চলছে।” এই ঘটনায় তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলে ধরনার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুরুলিয়া বিজেপির সভাপতি। সবমিলিয়ে অভিযোগ, পালটা অভিযোগ তোলপাড় পুরুলিয়ার রাজনীতি।