রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ভূপতিনগর বিস্ফোরণ কাণ্ডে নয়া মোড়। বাড়িতে বাজি তৈরি হত তা স্বীকার করে নিলেন নিহত তৃণমূল বুথ সভাপতির স্ত্রী লতারানি মান্না। তাঁর দাবি অনুযায়ী তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে রবিবার ৩ সদস্যের ফরেনসিক দল যাওয়ার কথা। ময়নাতদন্তের পর ওই তিনজনের দেহ এদিন পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
শুক্রবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ২ নম্বর ব্লকের ভূপতিনগর থানার অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাড়ুয়াবিলায় বোমা বিস্ফোরণ হয়। তাতেই প্রাণ হারান তৃণমূল বুথ সভাপতি-সহ তিনজন। এই ঘটনার পর শনিবার সকালে নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রী লতারানি দাবি করেন, একদল দুষ্কৃতী তাঁদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করেছে। তাতেই প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। তবে তারপর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই চাঞ্চল্যকর দাবি তৃণমূল নেতার স্ত্রীর। রবিবার তিনি দাবি করেন, বারবার বারণ করা সত্ত্বেও বাড়িতে বাজি বানাতেন তাঁর স্বামী। কারখানায় কাজ চলার সময় কোনও কর্মী ধূমপান করছিলেন। তার থেকে এই কাণ্ড। তৃণমূল নেতার চাঞ্চল্যকর বয়ান শোনার পর তদন্ত শুরু হয়েছে বলেই জানান মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সোমনাথ সাহা।
[আরও পড়ুন: বাড়ি ফেরার পথে লরির ধাক্কা, মৃত ট্রাফিক গার্ড হেড কোয়ার্টারের কনস্টেবল]
ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার এবং আধ কিলোমিটার দূর থেকে দু’জনের দেহ উদ্ধার করা হয়। ৪০ ফুট উঁচু গাছের উপর পৌঁছে গিয়েছে পোশাক। বাড়ি থেকে ২০ মিটার দূরে এখনও পড়ে রয়েছে ফ্যানের ব্লেড। তৃণমূল নেতার বাড়িও প্রায় ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতিতে নজর রাখলেই স্পষ্ট যে বিস্ফোরণ ঠিক কতটা শক্তিশালী ছিল। বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ ঠিক কী, তা নিয়ে এখনও জারি ধোঁয়াশা।
তবে তৃণমূল নেতার স্ত্রীর চাঞ্চল্যকর বয়ান ঘিরে একাধিক প্রশ্ন ভিড় করেছে। বাজি তৈরির আদৌ কি লাইসেন্স ছিল ওই তৃণমূল নেতার? বাজি তৈরির জন্য কী এমন মশলা বাড়িতে মজুত ছিল তাতে এমন শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটল? পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে রবিবার গ্রামে ফরেনসিক আধিকারিকদের যাওয়ার কথা। তবে পুলিশের ভূমিকায় যথেষ্ট ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। শনিবার থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত বহু মানুষ বিস্ফোরণস্থলে ঘোরাফেরা করেছেন। তা সত্ত্বেও ঘটনাস্থল পুলিশ কেন ঘিরে রাখল না, সেই প্রশ্ন তুলছেন এলাকার বেশ কয়েকজন। তার ফলে প্রমাণ লোপাটের সম্ভাবনা একেবারে এড়িয়ে যাওয়া যাচ্ছে না।