অর্ণব আইচ: ব্যবসায়িক সঙ্গীর উপর অতিরিক্ত আস্থাতেই কাল? প্রাণ দিয়ে মাসুল গুনতে হল কড়েয়ার প্রোমোটর সামশের আলিকে। কড়েয়ার শামসুল হুদা রোডে যুবকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় সামনে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। সামশেরের বাইক উধাও। সেটির খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।
কড়েয়ার শামসুল হুদা রোডে প্রোমোটর সামশের আলির বাড়ি। তার কাছেই অফিস। সেখানেই রাতে থাকতেন সামশের। তাঁর সঙ্গেই থাকতেন রাহুল। তিনি অসমের বাসিন্দা। বছর দেড়েক আগে রাহুল কলকাতায় আসে। তাকে নিজের কাছে রেখে কাজে বহাল করেন সামশের। অফিসের একটি চাবি থেকে শুরু করে স্কুটি, নিজের মোবাইল ‘বিশ্বস্ত’ রাহুলের কাছেই রাখতেন সামশের। মাঝেমধ্যে রাহুল কাছেই একটি ক্লাবে ঘুমাত। কখনও বা অফিসে। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা পর্যন্ত এলাকায় গল্পগুজব করেন সামশের। দুটো পর্যন্ত স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। এর পর তিনি অফিসে ঘুমোতে চলে যান।
[আরও পড়ুন: রাজস্থানে নারকীয় হত্যাকাণ্ড! প্রকাশ্যে হাতুড়ি পিটিয়ে খুন বিজেপির মুসলিম নেতা]
শুক্রবার বেলা বেড়ে যাওয়ার পরও সামশের বাড়ি ফেরেননি। এদিকে তাঁর দুই ছেলের স্কুল যাওয়ার সময়ও হয়ে যাচ্ছিল। তাই স্ত্রী ঘনঘন ফোন করতে শুরু করেন। স্বামীর সাড়াশব্দ না পাওয়ায় তাঁর সন্দেহ হয়। ১৬ ও ৭ বছরের দুই ছেলেকে সামশেরই স্কুলে নিয়ে য়েতেন। তাই সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ স্ত্রী স্বামীকে অফিসে খুঁজতে যান। দেখেন বাইরে থেকে অফিস তালা দেওয়া। অফিসের একটি চাবি তাঁর স্ত্রীকে কাছে ছিল। ওই চাবি দিয়ে তালা খুলে অফিসে প্রবেশ করে আঁতকে ওঠেন। দেখেন অফিস ঘরের ভিতর বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন সামশের।
পুলিশ ও ফরেনসিক সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর মাথায় চপার দিয়ে অসম্ভব জোরে আঘাত করেছে খুনি। আঘাত এতটাই জোরে যে মাথা থেকে ঘিলুর প্রায় পুরো অংশই ছিটকে গিয়ে পড়েছে বালিশ ও বিছানায়। খুলির ভিতর ‘গ্রে ম্যাটার’ প্রায় অবশিষ্ট ছিল না বললেই চলে। তবে খুনের পর চপারটি ফেলেই সে চলে যায়। সেটি উদ্ধার হয়েছে। খুনের আগে ঘরের সিসি ক্যামেরার উপর কাপড় ঢেকে দেয় খুনি। তাই খুনের ফুটেজ পাওয়া যায়নি। আশপাশের দুটি বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। সেগুলির ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। রাহুলই এই ঘটনায় জড়িত বলেই প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। তদন্তকারীদের ধারণা, রাতে রাহুল তাঁর সঙ্গে ছিল। ভোররাতে ঘুমের মধ্যেই তাঁকে খুন করে স্কুটি নিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায় রাহুল। তার খোঁজে চলছে তল্লাশি।