রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও দিব্যেন্দু মজুমদার: সিঙ্গুরে বিজেপির দলীয় কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশি বাধার অভিযোগ উঠল। রবিবার বিজেপি কর্মীরা সিঙ্গুরে (Singur) মঞ্চ বাঁধতে গিয়ে পুলিশি বাধা পান। এই প্রসঙ্গে বিকেলে রাজ্য দপ্তরে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) হুঁশিয়ারি দেন, “মঞ্চ ভেঙে সিঙ্গুরের কর্মসূচি রোখা যাবে না। সিঙ্গুরে কর্মসূচি হবেই। আমি যাব, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যাবেন, দিলীপদাকেও আমি সিঙ্গুরে যাওয়ার অনুরোধ করেছি। পুলিশ দিয়েও বিজেপিকে রোখা যাবে না।” ফলে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া সিঙ্গুরে বিজেপির কর্মসূচি ঘিরে গন্ডগোলের আশঙ্কা থাকছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
যে মাটিতে কৃষক আন্দোলন শুরু করে বাংলায় বাম বিদায়ের সূচনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee), সেই সিঙ্গুরেই কৃষকদের জন্য সাত দফা দাবি নিয়ে ১৪ থেকে ১৬ ডিসেম্বর অবস্থান বিক্ষোভ করতে চলেছে গেরুয়া শিবির। আর সেই অবস্থান-কর্মসূচি শুরুর প্রস্তুতি হিসাবে দলের মঞ্চ তৈরি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়ালেন বিজেপি নেতারা। রবিবার সিঙ্গুরের গোপালনগরে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন এলাকায় মঞ্চ বাঁধতে গিয়ে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন বিজেপি কর্মীরা। দলের তরফে এমনই অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান বিজেপির রাজ্য নেতা সায়ন্তন বসু, দীপাঞ্জন গুহরা।
[আরও পড়ুন: প্রেমের ফাঁদে ফেলে TMC কাউন্সিলরকে আত্মহত্যার প্ররোচনা, দেড় বছর পর গ্রেপ্তার আপ্ত সহায়ক]
সায়ন্তন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি তাদের এই কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দেয় তবে দক্ষযজ্ঞ হবে, কুরুক্ষেত্র হয়ে যাবে। সায়ন্তন বসু বলেন, পুলিশের দাবি জাতীয় সড়ক কতৃর্পক্ষের অনুমতি ছাড়া মঞ্চ বাঁধা যাবে না। দলের তরফে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন। যেহেতু জমি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের, সেখানে পুলিশ অনুমতিপত্র চাওয়ার কেউ নয়। এই পরিস্থিতিতে আপাতত মঞ্চ বাঁধার কাজ একদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ বাধা দিলে হয় সিঙ্গুর আন্দোলন হবে, নয়তো পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপি নেতারা।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই এলাকা যেহেতু জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের, তাই তাদের দেওয়া অনুমতিপত্র দেখালে পুলিশ তাতে সিলমোহর দেবে। জানা গিয়েছে, বিজেপির (BJP) পক্ষ থেকে রবিবার পর্যন্ত সেই অনুমতিপত্র দেখাতে না পারার জন্যই মঞ্চ বাঁধতে দেয়নি পুলিশ। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য তোপ দেগে বলেন, “তৃণমূলের পুলিশ বাম আমলের পুলিশের চেয়েও বেশি সক্রিয়। বাম আমলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুরে মঞ্চ বেঁধে আন্দোলন করেছিলেন। আর এখন পুলিশ মঞ্চই করতে দিচ্ছে না। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে আমাদের প্রতিনিধি দল রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কৃষকদের অসহনীয় পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন। আমাদের রাজ্য সরকারের কাছে উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যূনতম দাম, বিদ্যুৎ মাশুল মকুব-সহ ৭ দফা দাবি রয়েছে।”