ধীমান রায়, কাটোয়া: কাঠফাটা রোদ। ফুটিফাটা মাটি। কোথাও জলের চিহ্ন নেই। কিন্তু রাতারাতি পুকুর নাকি ভরে গেল জলে। তাও আবার বুক সমান জল। অলৌকিক কাণ্ড নাকি নেপথ্যে রয়েছে কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা? দ্বিধায় পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের ভূমশোর ও বামশোর গ্রামের বাসিন্দারা।
ভাতারের ভূমশোর ও বামশোর গ্রামের মাঝামাঝি এলাকায় অবস্থিত ঝিংকে পুকুর। উষা মৌজায় এক বিঘা আয়তনের পুকুরটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। বেশ কয়েকজন শরিকও রয়েছেন। শরিক পরিবারগুলি নিজেরাই খরচ করে পুকুর সংস্কারের কাজ করেছেন। প্রায় দু’মাস আগে পুকুরের মাটি কাটা হয়। তিন সপ্তাহ আগে কাজ মোটামুটি শেষও হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি শুকনো পুকুরই হয়ে গিয়েছে জলে টইটুম্বুর। আশপাশের কোথাও জল নেই। বৃষ্টিও তেমন হয়নি। তাহলে হঠাৎ করে এত জল কীভাবে এল, তা নিয়েই কানাঘুষো নানা আলোচনা চলছে।
[আরও পড়ুন: ঝড়বৃষ্টির জের, সোনারপুরে ভেঙে পড়ল ইদ উপলক্ষে তৈরি বুর্জ খালিফা]
অনেকেই বলছেন, এ যেন এক অলৌকিক কাণ্ড। গ্রামবাসীদের ধারণা, দৈবিক কারণ ছাড়া এটা সম্ভব নয়। পুকুরের জল নিতে ভিড় করছেন আশপাশের গ্রামের মানুষ। পবিত্র জল ভেবে, তা বাড়ি নিয়ে যেতে চাইছেন ভূমশোর, বামশোর, পাটনা, উষা গ্রামের বাসিন্দারাও। অনেকেই মনে করছেন, এই পবিত্র জলপান করলে রোগব্যাধি দূর হবে। জগ-বোতল নিয়ে শুরু হয়েছে ছুটোছুটি।
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যরা অবশ্য গ্রামবাসীদের এই বিশ্বাস মানতে নারাজ। কেন পুকুর আচমকা জলে ভরে গেল, তার সম্ভাব্য কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের ভাতার ব্লক কমিটির সভাপতি সিরাজুল হক বলেন, ” ওই ঘটনার মধ্যে অলৌকিক কিছু নেই। আগে ওই পুকুরের ভূমির অবস্থান দেখতে হবে। যদিও আশপাশে এক দেড়শো মিটারের মধ্যে জলের কোনও উৎস থাকে তাহলে সেই জল চুঁইয়ে আসতে পারে। অথবা জলস্তর যদি খুব কাছাকাছি হয় তাহলে আর্টেজিও কূপের তত্ত্ব অনুযায়ী বিষয়টি ঘটতে পারে।দেখার পর পুরো বোঝা যাবে।” বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যদের কথায় আাবার কান দিতে নারাজ গ্রামবাসীরা। আপাতত পাড়ার চায়ের দোকান হোক কিংবা রকের আড্ডা – সর্বত্র পুকুরের জল জমা নিয়েই চলছে চর্চা।
দেখুন ভিডিও: