অর্ণব দাস, বারাসত: বিজেপি প্রার্থীর মাদকযোগ নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় প্রশ্ন ওঠার পর এবার বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের একাধিক জায়গায় পোস্টার পড়ল স্বপন মজুমদারের (Swapan Majumder) বিরুদ্ধে। ড্রাগ পাচারের মামলায় নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ১০ বছরের সাজা হয়েছিল তাঁর। সেই খবরের পেপার কার্টিং তুলে ধরে পোস্টার দেওয়া হয়েছে বারাসতের (Barasat) একাধিক জায়গায়। এই ঘটনায় রীতিমতো সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর প্রার্থী বদলের দাবি উঠেছে বিজেপির (BJP) অন্দরেই।
এই ইস্যুতে সম্প্রতি সরব হয়েছিল তৃণমূল (TMC)। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে স্বপনকে নিশানা করে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ লেখেন, ‘ইনিই কি বিজেপির এ বারের বারাসতের প্রার্থী? যদি হন, তা হলে তিনি মাদক-কাণ্ডে ঘোষিত অপরাধী। বিজেপি ব্যাখ্যা দিক।’ কুণাল তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে একটি খবরের কাগজের কাটিং ও ২০২১-র বিধানসভা ভোটে মনোনয়নপত্রে স্বপনের উল্লেখ করা, মাদক আইনে মামলা থাকার বিষয়টিও তুলে ধরেছেন। শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি প্রার্থী বদলের দাবি জানিয়েছিলেন অশোকনগর বিড়া রাজীবপুর পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রার্থী শ্যামল দাসও। তিনি লেখেন, ‘দল যাকে প্রার্থী করেছে তিনি ড্রাগ মাফিয়া। এমন একজন প্রার্থীর হয়ে আমরা কীভাবে ভোট চাইতে যাব? এটা লজ্জার।’
[আরও পড়ুন: প্রচারে শচীন তেণ্ডুলকরের ছবি ব্যবহার, ইউসুফ পাঠানের বিরুদ্ধে কমিশনে কংগ্রেস]
অবশ্য নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিয়ে স্বপন বলেন, “২০১৬ থেকে ২১ সাল পর্যন্ত বিজেপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে তৃণমূল। এখানে একটা সময়ে তৃণমূলের ঘাঁটি ছিল। সেটা আমি ভেঙেছিলাম। তাই আমাকে আটকাতে পরিকল্পনা করে আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হয়েছিল। তবে ন’মাসের মধ্যে উচ্চ আদালত আমাকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করে বেকসুর খালাস করে দিয়েছিল। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের মনোনয়নেও আমি সেটা জানিয়েছিলাম। তারপরও মানুষ আমায় ভোট দিয়ে জিতিয়েছে। এখন ওরা(তৃণমূল) সেই ঘটনা তুলে আমার চরিত্র হননের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাতে লাভ কিছু হবে না।” পাশাপাশি তাঁকে সরানোর দাবি তোলা দলীয় নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে স্বপন বলেন, “তৃণমূল টাকার লোভ দেখিয়ে কয়েকজনকে দিয়ে এইসব করাচ্ছে। ধীরে ধীরে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।”
[আরও পড়ুন: বিজেপিতে প্রত্যাবর্তনের ‘পুরস্কার’, নিরাপত্তা বাড়ল অর্জুন সিংয়ের]
প্রসঙ্গত, বিতর্কিত বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মায়ানমার থেকে মাদক এনে অসম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর-সহ গোটা দেশে পাচার করেন। এই ঘটনায় ২০১৭ সালের মার্চ মাসে স্বপনকে গ্রেপ্তার করেছিল অসম পুলিশ। দায়রা আদালতে তাঁর ১০ বছরের কারাদণ্ডও হয়। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মনোনয়ন পত্রেও সেকথা তুলে ধরেন স্বপন। এ প্রসঙ্গে বারাসতের তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, “২০১৭ সালে অসমে কি তৃণমূলের সরকার ছিল? ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের মনোনয়নপত্রে স্বপন যা নিজেই উল্লেখ করেছেন, তা কি তৃণমূল লিখিয়ে দিয়েছিল?”