গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: আবারও চিংড়ির মীন পাচারের রমরমা বাড়ছে উত্তর চব্বিশ পরগনা (North 24 Parganas) সীমান্তের বসিরহাটে (Bashirhat)। মঙ্গলবার বাংলাদেশে (Bangladesh) পাচারের আগেই বসিরহাটের স্বরূপনগর গাবরডাহ্ সীমান্ত থেকে ৫৬টি প্যাকেট ভরতি মাছের মীন উদ্ধার করলেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা (বিএসএফ)। যার আনুমানিক মূল্য ১৩ লক্ষ টাকা।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী সূত্রে খবর, বুধবার ভোর রাতে ভারত-বাংলাদেশের গাবরডাহ্ সীমান্ত এলাকায় ১৫৩ নং ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা সীমান্তে টহলের সময় ৫৬টি পলিথিন ভর্তি বাগদার মীন আটক করে। উদ্ধার হওয়া মাছের মীনগুলি শুল্ক দপ্তরের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এর আগে গত মাসেও বেশ মীন পাচারের বেশ রমরমা বেড়েছিল উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলার সীমান্তজুড়ে। বেশ কয়েকবার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরাও পড়ে পাচারকারীরা। তারপর থেকেই মীন পাচার বেশ কম ছিল। কিন্তু সীমান্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, আবার সেই মীন পাচারের রমরমা বাড়ছে। কখনও সাইকেল বা বাইকের টিউবের মধ্যে পাচার, গাড়ি বা বাইকের যন্ত্রাংশ খুলে তাতে ভরে পাচার, কুমড়োর ভিতরে পাচার, এমনকী সীমান্তে চাষিরা চাষ করতে যাওয়ার সময় ভাতের হাঁড়িতেও চলে এই পাচার। কিন্তু অতীতের সমস্ত কিছুকে হার মানিয়ে দিয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের সাম্প্রতিক চোরাচালানের নতুন পদ্ধতি। মৃত পশুর দেহ থেকে নাড়িভুঁড়ি বার করে সেখানে বেআইনি পণ্য ভরে সেলাই করে জলে ভাসিয়ে বাংলাদেশে পাচার করার এই পদ্ধতিতে তাজ্জব সীমান্ত রক্ষী বাহিনীও।
[আরও পড়ুন: বাড়িতে বসেই রেশন কার্ডের সঙ্গে Aadhaar সংযোগ! মুশকিল আসানে দুয়ারে প্রশাসন]
সীমান্তের মৎস্যজীবীদের অধিকাংশেরই মত, ইলিশ মাছের বিপুল পরিমাণ যোগান থাকলেও চিংড়ি উৎপাদনে তলানিতে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। সেদেশে একেবারেই চিংড়ি উৎপাদন হয় না বললেই চলে। তাই প্রতি বছরই এই সময় বিভিন্নভাবে বিপুল পরিমাণে বাগদা ও গলদার মীন বা লার্ভা পাচার হয় বাংলাদেশে। আর মূলত উন্নত প্রযুক্তির কারণে এরাজ্য এবং চেন্নাই, কেরল, ওড়িশা থেকে এই মাছের লার্ভাগুলিকে এনে বড় প্ল্যাস্টিকের প্যাকেটে জল দিয়ে তাতে অক্সিজেন আলাদা করে ভরে দেওয়া হয়। এরপর বিভিন্নভাবে সেই প্যাকেট পাচার করা হয় বাংলাদেশে। প্রায় চার-পাঁচঘণ্টা এভাবে মাছের লার্ভা বেঁচে থাকতে পারে। মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা শুরুর মুখেই এই ব্যবসা বেড়ে যায় সীমান্ত এলাকায়। একটি লার্ভার দাম এখানে ৭৫ পয়সা থেকে ১ টাকার মতো দাঁড়ায়। প্রতি প্যাকেট হিসেব করলে সেই অঙ্ক হয় আট থেকে দশ হাজার টাকার মতো। কিন্তু পাচারের পর বাংলাদেশে পৌঁছালে সেই অংকটা দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে যায়। কখনও চার থেকে ছয় গুণ হয়ে যায়।