সুমন করাতি, হুগলি: নবমীর রাতে তখন রাস্তায় প্রচুর ভিড়। যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই লোকে লোকারণ্য। তারই মাঝে প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছেন তরুণী। বেকায়দায় বাবা। রাস্তায় বারবার খারাপ হয়ে যাচ্ছে গাড়ি। এই অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে কী করবেন তা ভেবেই কুল কিনারা পাচ্ছিলেন না পরিবারের লোকজন। শেষে এগিয়ে এল মহিলা পুলিশের দল। চন্দননগর কমিশনারেটের উইনার্স বাহিনীর তৎপরতাতেই শেষে বছর পঁচিশের তরুণীতে হাসপাতালে ভর্তি করা সম্ভব হয়।
হুগলির পাণ্ডুয়ার জায়ের দ্বারবাসিনীর বাসিন্দা বছর পঁচিশের তুহিনা পারভিন অন্তঃসত্ত্বা। সোমবার রাতে প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। ক্রমশ বাড়তে থাকে যন্ত্রণার তীব্রতা। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবারের লোকজন। কিন্তু পুজোর ভিড় ঠেলে কীভাবে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়েই বাড়ে চিন্তা। শেষে ডাকা হয় গাড়ি। ওই গাড়ি করে মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন পরিবারের লোকজন। সূত্রের খবর, বাড়ি থেকে রওনা হলেও রাস্তাতে বারবার খারাপ হয়ে যাচ্ছিল গাড়ি।
[আরও পড়ুন: উৎসবের আনন্দের মাঝে চাষের জমিতে মিলল পচাগলা দেহ, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ঘনাচ্ছে রহস্য]
তাঁদের দুরাবস্থা দেখে ছুটে আসেন উইনার্স বাহিনীর ইন্সপেক্টর বর্ণালী গঙ্গোপাধ্যায়। ডেকে নেন তাঁর দলকেও। ভাগ্যক্রমে সেই সময় ওই জায়গা দিয়ে যাচ্ছিলেন ব্যান্ডেল ফাঁড়ির ওসি অতনু মাঝি। তিনিও ছুটে আসেন। দ্রুত অন্য একটি গাড়ি করে ওই তরুণীকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তরুণীর বাবা কাওসার আলি জানান, নানা জায়গায় বারবার খারাপ হয়ে যাচ্ছিল গাড়িটা। চলতে চলতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। ব্যান্ডেল রেল ব্রিজের নিচ দিয়ে আসার সময়ও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
তারপর আবার চললেও কিছুটা আসার পর ফের বন্ধ হয়ে যায়। তবে পুলিশ যেভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তাতে তিনি আপ্লুত। চন্দননগর পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি উইনার্স টিমের সদস্যদের এবং ব্যান্ডেল ফাঁড়ির ইনচার্জকে সাধুবাদও জানিয়েছেন। পুজোর সময় সব মানুষ যখন আনন্দে মেতে, সেই সময় পুলিশের মানবিক ভূমিকাকে সাধুবাদ জানিয়েছে সকলেই।