সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় (Pathar Pratima) তিনজন শিক্ষক আর ৯০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে চলছে কুড়ি ফুট বাই ১২ ফুট চওড়া স্কুল! অভিভাবকদের দাবি স্কুল নয়, চিড়িয়াখানার জন্তু-জানোয়ারের একটি কক্ষ। কতদিন এভাবে চলবে? প্রশ্ন, স্থানীয়দের।
সুন্দরবনের (Sundarban) প্রত্যন্ত পাথরপ্রতিমা দ্বীপে রয়েছে ছোট বনশ্যামনগর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলটিতে একটিমাত্র ঘর। সেটি ২০ ফুট বাই ১২ ফুট। ওই ঘরেই বসেন তিন শিক্ষক, চলে অফিসের কাজ, থাকে মিড ডে মিলের মালপত্র, রয়েছে ছোট একটি লাইব্রেরিও। ছোট্ট ঘরটিতে রয়েছে একটি বারান্দা। সেখানে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ৯০ জন ছাত্রছাত্রী একসঙ্গে। একজন শিক্ষক যখন কোনও একটি ক্লাস নেন, অন্যরা তখন আপন মনে খেলে অথবা ঘুমায়। বাকি দু’জন শিক্ষকের দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া উপায় নেই। শীতকালে হাড়কাঁপুনি ঠাণ্ডায় উত্তরের বাতাস যখন বয়, তখন বসে থাকতে পারে না ছাত্রছাত্রীরা। আবার প্রচণ্ড গরমে ছাত্র-ছাত্রীরা রোদের গরম বাতাস সহ্য করতে না পেরে চলেই যায় বাড়িতে।
[আরও পড়ুন: পুজোর অনুমতি মিলছে না আলিপুরদুয়ার জংশনে, তরজায় রেল-তৃণমূল]
পড়াশোনার খতিয়ান দেখতে গেলে ছাত্রছাত্রীদের ভাঁড়ার শুধুই শূন্য! কেন এমন দশা জানতে চাইলে স্কুলের এক শিক্ষক জানিয়েছেন, নোনা ধরা ইটের দেওয়ালের উপর কোনওক্রমে টালি দেওয়া একটি লম্বা ঘর ছিল। যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়ে কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। সেই আশঙ্কায় ভেঙে দেওয়া হয় ঘরটি। পরে সরকারিভাবে ওই ছোট্ট ঘর তৈরি করে দেওয়া হয় শিক্ষকদের পড়ানোর জন্য। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা ব্লক প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। হেলদোল নেই স্থানীয় কোনও রাজনৈতিক নেতাদের। প্রবল চিন্তা অভিভাবকরা। সকাল থেকে স্কুল ছুটি পর্যন্ত বাইরে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করতে হয় তাঁদের, পাছে কোনও অঘটন ঘটে। অভিভাবকরা জানিয়েছেন, এভাবে যদি আরও কিছুদিন চলে তাহলে এ রাজ্যে উঠে যাওয়া স্কুলের তালিকায় স্থান পাবে এই এটিও।