শেখর চন্দ, আসানসোল: আবার প্রোমোটার রাজ আসানসোলে। আদিবাসীদের জমি দখলের অভিযোগ উঠল জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সরকারি পাট্টা দেওয়া জমি ও দখল করে নিচ্ছে প্রোমোটাররা। বুলডোজারের সামনে বিক্ষোভের জেরে পিছু হঠল ঠিকাদার। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল আসানসোলে।
আসানসোল পুরনিগমের ৯৪ নম্বর ওয়ার্ড ভালুকজোর পাঞ্জাবিডাঙা এলাকার এই ঘটনা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ১৯৮৭ সালে সরকার থেকে জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছিল। কারও দাবি তাঁর দাদুর মালিকানাধীন রয়েছে জমি। আবার কারও শ্বশুরমশাইয়ের মালিকাধীন। আর সেই জমিতে বুলডোজার চালানো হচ্ছে। বেআইনিভাবে জমির মালিকানার নাম বদলে ফেলা হয়েছে। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন ৫০ বছর ধরে ওই এলাকায় তারা বসবাস করছে। চাষ করছেন। বর্গাদারী নিয়ম না মেনে তাঁদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা চলছে। স্থানীয় কাউন্সিলরের কোনও সহযোগিতা তারা পাননি বলেই দাবি। কাউন্সিলর জানিয়েছিলেন দু’পক্ষের আলোচনার পরই জমিতে প্রোমোটিং-এর কাজ শুরু হবে কিন্তু রাতারাতি জেসিবি মেশিন বুলডোজার নামিয়ে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: নজরে কয়লা খনির নিরাপত্তা! দেউচা-সহ নতুন ৩ থানা পেল বীরভূম]
বাধা হয়ে দাঁড়ান স্থানীয়রা। বিক্ষোভ শুরু হতেই জেসিবি মেশিন বুলডোজার নিয়ে পালায় ঠিকাদার। কিন্তু কোন প্রোমোটারের তত্ত্বাবধানে এই কাজ চলছিল তা জানা যায়নি। বিক্ষোভকারী বাসিন্দারা অধিকাংশই এসসিএসটি অর্থাৎ আদিবাসী ও বাউরি সম্প্রদায়ভুক্ত। প্রশ্ন উঠেছে, আদিবাসী সম্প্রদায়ের জমি কীভাবে বেহাত হচ্ছে। এদিন স্থানীয় বিজেপি নেতত্ব গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে অংশ নেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় হিরাপুর থানার পুলিশ। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বের দাবি, আদিবাসীদের জমি এ রাজ্যে বেহাত হয় না। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। তৃণমূল রাজ্য কোর কমিটির সদস্য তথা বার্নপুর এলাকার বাসিন্দা অশোক রুদ্র বলেন, “আমার ওই আদিবাসী বাসিন্দাদের আবেদন তারা যেন বিজেপির ইন্ধনে পা না বাড়ান। জমি নিয়ে অভিযোগ থাকলে নির্দিষ্ট যে দপ্তর রয়েছে সেখানেই যেন অভিযোগ তারা জানায়।”
তবে কোন প্রোমোটার ওই এলাকায় জমি দখল করছে বা প্রোমোটারিরাজ চালাতে চাইছে তা অবশ্য সামনে আসেনি। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বার্নপুরের জনৈক ফিরোজ খান, টিংকু খান বা রাজু নামে কেউ এই কাজ চালাচ্ছে। আর ফিরোজ টিংকু বা রাজুরা হলেন বার্নপুরের কুখ্যাত লোহা কারবারির লোক।